বন্দর উপজেলার কুড়িপাড়া কুটিরবন এলাকায় একটি বাড়ির মালিকের স্ত্রীকে নিয়মিত উত্যক্ত করা বাড়ির ভাড়াটিয়াদের সাথে খারাপ আচরণ, ১৪ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও নারী নির্যাতন করার অভিযোগ এনে ভুক্তভোগী নারী শাহানারা আক্তার বাদী হয়ে সানীল, অপূর্ব, মাহফুজ, তামিম, সাত্তার, আরিফ, কালাম, আলম, সাগর, হাফিজ, আ: রাজ্জাকদেরকে বিবাদী করে বন্দর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এবং অভিযোগের ভিত্তিতে বিবাদীদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গত ২১ সেপ্টেম্বর মামলা হয়েছে। যার মামলা নং-২৩।
এদিকে মামলা হলেও অনেক আসামি এখনও রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। মামলার আসামি অপূর্ব ও হাফিজকে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে পাঠালে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁদের কারাগারে প্রেরণ করে। মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে বন্দর থানা পুলিশ।
জানা যায়, বন্দর কুড়িপাড়া কুটিরবন এলাকায় কিশোরগ্যাং হিসেবে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি-ছিনতাই, মাদক ব্যবসা, ইভটিজিং থেকে শুরু করে সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয়েই মূলত বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করার পরেও এসব আসামীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
ভুক্তভোগী শাহানারা আকতার জানান, প্রায় দুই বছর আগে কুড়িপাড়া কুটির বন এলাকায় একটি ১ তলা বাড়ি নির্মাণ করি। সে থেকেই বিবাদীরা আমার সাথে খারাপ আচরণ সহ আমাকে ইভটিজিং করতো। আমি ভাড়া তুলতে গেলে বিবাদীরা আমার ১৪ রুমের ভাড়া বাড়ির জন্য ১৪ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে।
গত রবিবার বিকেল চারটায় আমার পরিবারের কিছু আত্মীয় নিয়ে ভাড়াটিয়ার সাথে আমি দেখা করতে গেলে ১নং ও ৩নং বিবাদী আমার কাছে এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। তাছাড়া সকল বিবাদী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মারপিট করতে আসে। আমাদের ডাক-চিৎকারে পার্শ্ববর্তী লোকজন ছুটে এলে তারা আমার স্বামী ও ছেলে এখানে আসলে তাদের প্রানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
ভুক্তভোগির স্বামী হাজী আকতার হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিবাদীরা খারাপ প্রকৃতির লোক। বিশেষ করে সানিল ও অপূর্ব অত্যন্ত ভয়ংকর। এরা কিশোরগ্যাং লিডার, কুখ্যাত সন্ত্রাসী, মাদকসেবী, মাদক ব্যবসায়ী এবং চাঁদাবাজ। তারা উল্লেখিত এলাকায় মাদকের রামরাজত্ব গড়ে তুলেছে এবং চাঁদাবাজি করা তাদের প্রধান পেশা।
এদিকে মামলা হওয়ায় ও আসামিদের গ্রেফতারের খবরে বুধবার বিকেলে উল্লেখিত কুটিরবন এলাকাবাসী মাদক সেবীদের আস্তানা পুড়িয়ে দিয়ে আস্তানার মালামাল নদীতে ফেলে দিয়েছে এবং এলাকায় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে। মামলার অন্যান্য আসামিদেরকে দ্রুত গ্রেফতারের মাধ্যমে কুটিরবন এলাকাকে মাদকের ছোবল থেকে বাঁচাতে প্রশাসনের কাছে জোরালো অনুরোধ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
বন্দর থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা জানান, আসামি ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে। মামলার সকল আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।