নগর সংবাদ।।বরিশালের হিজলা উপজেলার হরিণাথপুর (শেওড়া সৈয়দখালী) পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় যুবলীগ নেতাসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার (২৭ মার্চ) বিকেলে তাদের হিজলা থানা থেকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন- হরিনাথপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মতিউর রহমান বিপ্লব, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগকর্মী (ভ্যানচালক) মনির রাঢ়ী, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক সৌরভ সিকদার, জাকির হোসেন, সোলায়মান, মাইনউদ্দিন ও মাহফুজ। তারা সবাই হরিনাথপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা
হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইউনুস মিয়া বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় মনির রাঢ়ীর ভ্যানের ধাক্কায় হরিণাথপুর (শেওড়া সৈয়দখালী) পুলিশ ফাঁড়ির এক সদস্য আহত হন। পরে ওই পুলিশ সদস্য মনিরকে ভ্যান থামাতে সংকেত দেন। তবে চালক মনির দ্রুত গতিতে ভ্যান চালিয়ে চলে যান। পরে মনির ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মো. শাহরিয়া বাদল সিকদার ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মতিউর রহমান বিপ্লবের কাছে এ ঘটনা ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেন।
ওসি আরও বলেন, শনিবার রাতে শাহরিয়া বাদল সিকদার ও মতিউর রহমান বিপ্লবের নেতৃত্বে ১৪০ থেকে ১৫০ জন দলবদ্ধ হয়ে হরিণাথপুর (শেওড়া সৈয়দখালী) পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালান। এ সময় তারা মেহেদী হাসান নামে ফাঁড়ির এক পুলিশ সদস্যকেও মারধর করেন। পরে থানা পুলিশকে জানানো হলে হামলাকারীরা চলে যান। আহত পুলিশ সদস্য মেহেদী হাসানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে হরিনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুর রহমান সিকদার বলেন, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শনিবার হরিণাথপুর বাজারে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যার পর ডেকোরেটরের চেয়ার-টেবিলসহ অন্যান্য মালামাল একটি ভ্যানে ফেরত পাঠানো হচ্ছিল। এ সময় ফাঁড়ির সামনে সড়ক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল দুই পুলিশ সদস্য। তাদের একজনের গায়ে ভ্যানগাড়ির মালামালের ধাক্কা লাগে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ভ্যানচালক মনির রাঢ়ীকে মারধর করে ওই দুই পুলিশ সদস্য।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, মনির বাজারে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এসে কান্নাকাটি করে মারধরের ঘটনা জানায়। তখন বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী দলীয় কার্যালয়ে ছিল। তারা ভ্যানচালকের মুখে নির্যাতনের কথা শুনে উত্তেজিত হয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে যায়। তখন ফাঁড়িতে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মী ও গ্রামবাসীর বাদানুবাদ হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও হামলা বা কোনো পুলিশ সদস্যকে মারধরের ঘটনা ঘটেনি।
জেলা সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) মো. মতিউর রহমান বলেন, হরিনাথপুরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া হামলা ও পুলিশ সদস্যদের মারধরের ঘটনায় ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক মো. মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ২০ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ১২০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। হরিনাথপুরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিকেলে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।