ভাষার জন্য আত্মদানকারী শহীদদের জাতি স্মরণ করবে আজ (বুধবার)। শোকার্ত বুকে দাঁড়াবে শহীদ মিনারের সামনে, হাতে থাকবে শ্রদ্ধার ফুল। ১৯৫২ সালের ঘটনায় শাণিত হয়ে জাতি আরেকবার সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা খুঁজবে।
দেশ বিভাগের পর বাংলাভাষীদের মধ্যে যে ভাষাচেতনা বেড়ে উঠতে থাকে, তারই পূর্ণ প্রকাশ ১৯৫২ সালে। পাকিস্তানি শাসকদের উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে নামে পূর্ব বাংলার মানুষ। ১৪৪ ধারা ভেঙে ১৯৫২ সালের এই দিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮ বঙ্গাব্দ) বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশ গুলিবর্ষণ করে। এতে রফিক, জব্বার, সালাম, বরকত, শফিউরসহ কয়েকজন তরুণ শহীদ হন। তাই এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।
১৯৯৮ সালে কানাডার ভ্যানকুভার শহরে বসবাসরত দুই বাঙালি রফিকুল ইসলাম ও আবদুস সালাম প্রাথমিক উদ্যোক্তা দিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণার আবেদন জানিয়েছিলেন জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব কফি আনানের কাছে। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোতে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন। দিবস উদযাপনের জন্য দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বুধবার দেশে সাধারণ ছুটি। আজ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।
ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন। এছাড়া কূটনীতিক, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, ভাষাসৈনিক, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেত্রীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিকদল শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। তাদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর শহীদ মিনার সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।