বাগেরহাট প্রতিনিধি ।।
জেলায় কাল বৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে অন্তত দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ের সময়ে বজ্রপাতে একব্যক্তি নিহত হয়েছেন।এছাড়া গাছ ও বিলবোর্ড পড়ে ১০ জন আহত হয়েছেন।
রোববার (০৭ এপ্রিল) সকাল ৯টা ৪০ থেকে ১০টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলা কাল বৈশাখী ঝড়ে এই ক্ষয়ক্ষতি হয়।
নিহত আরিফুল ইসলাম লিকচান (৩০) কচুয়া উপজেলার চরসোনাকুর গ্রামের বাসিন্দা। গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন তিনি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হঠাৎ করে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে আসে পুরো জেলা। সকালেই যেন রাত নেমে আসে। এর কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় বজ্রসহ ঝড় ও বৃষ্টি। এতে বাগেরহাট সদর উপজেলার পুটিমারি, রাধাবল্লভ, গবরদিয়, ডেমা, বাঁশবাড়িয়া, শহরতলীর মারিয়া পল্লী ও কচুয়াসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে এই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়া বাগেরহাট টার্মিনাল এলাকায় ঝরে বিলবোর্ড পড়ে একটি বাস ও পাঁচটি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং দুইজন বাস শ্রমিক আহত হয়েছেন। ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
দুপুরে বাগেরহাট সদর উপজেলার রাধাবল্লব বেড়িবাঁধ এলাকায় সরজমিনে দেখা যায়, বাঁধের পাশে আশ্রয় নেওয়া তারা বানু খোলা আকাশের নিচে সন্তানদের নিয়ে বসে আছেন। তার ভাষায়, মুহূর্তের মধ্যেই ঘর উড়িয়ে নিয়ে সব শেষ করে দিয়েছে। এখন ঘরের পোতা (পালা) ছাড়া কিছু নেই। কি করব? কোথায় যাব? বলেই ফ্যাল ফ্যাল করে কেঁদে উঠেন।
বাগেরহাট পৌরসভার সোনাতলা এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ বলেন, পৌনে ১০টার দিকে হঠাৎ মেঘাচ্ছন্ন হয় আকাশ। মুহূর্তের মধ্যে চারিদিকে অন্ধকার নেমে প্রচণ্ড বাতাস, ঝড়ো হওয়া ও বৃষ্টি শুরু হয়। এতে বেশকিছু গাছপালা ভেঙ্গে পড়ে। ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ডেমা এলাকায় রিয়াদ হোসেন বলেন, মূহুর্তেই ঘরের চাল উড়ে গেছে। এখন খোলা আকাশের নিচে আছি। কয়েকদিন পর ঈদ, কি করব বুঝতে পারছি না। সরকারের সহযোগিতা না পেলে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারব না।
গোবরদিয়া এলাকার নিলা বেগম বলেন, সকাল বেলায় ঘরের কাজ করছিলাম। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দমকা হাওয়ায় ঘরের চাল, বেড়াসহ সব কিছু উড়ে গেছে। ঘরের টিন উড়ে গাছের মাথায় উঠে গেছে। এখন খোলা আকাশের নিচে আছি।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, আকস্মিক ঝড়ে বেশকিছু ঘরবাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিপূরণ নিরূপণের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তালিকা পেলেই ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।