বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বিষখালী গ্রামে অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় দীপা রায় নামের এক গৃহবধূর বাড়িতে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চাচাতো ভাসুরের বিরুদ্ধে।
চার বছর বয়সী একমাত্র ছেলেকে নিয়ে অনেকটা বন্দি জীবনযাপন করছেন দীপা।
দীপা রায় বলেন, চাকরির সুবাদে আমার স্বামী বাদল দাস ঢাকায় থাকেন। একমাত্র ছেলে সৌম্যকে নিয়ে আমি বাড়িতে থাকি। আমাদের বাড়ির পাশেই আমার ভাসুর (বাদল রায়ের চাচাতো ভাই) বিনয় দাসের বাড়ি। বিনয় দাসের বাড়ির পাশ দিয়েই আমাদের যাতায়াত করতে হয়। প্রায় চার বছর আগে আমরা এখানে বাড়ি করেছি। এখানে বাড়ি করার পর থেকেই আমার ভাসুর বিনয় দাস আমাকে নানাভাবে অনৈতিক প্রস্তাব দিতে থাকেন। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি আমার নামে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে প্রায় দুই মাস আগে বিনয় ও তার ভাই বিপুল দাসসহ স্থানীয় কয়েকজন এসে আমাদের চলাচলের রাস্তাটিতে কাঁদামাটি ফেলে পুরোপুরি বন্ধ করে দেন। আমি ও আমার ছেলেকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয় তখন। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালে তারা আমাদের উদ্ধার করে। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতে সালিশ বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে বিষয়টি সমাধানের জন্য বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিপন দাসের ওপর দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান বিষয়টি সমাধান না করে বার বার আশ্বাস দিতে থাকেন। সেই থেকে আমি ও আমার ছেলে বাড়িতে এক প্রকার গৃহবন্দি অবস্থায় আছি।
দীপা রায়ের স্বামী বাদল দাস বলেন, আমার স্ত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাবের বিষয়টি আমি জানি। জায়গার বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান সমাধান করে দেওয়ার কথা বললে আমি এলাকায় আসি। চেয়ারম্যান তিনদিনের মধ্যে সমাধানের কথা বললেও আজ কাল করে করেননি। তিনি কেন সমাধান করছেন না, তা আমি জানি না। আমার স্ত্রী ও সন্তান চরম সমস্যায় ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আমি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চাই।
তাদের প্রতিবেশি চন্দনা দাস বলেন, দীপার স্বামী ঢাকায় থাকেন। বাড়িতে দীপা তার ছোট বাচ্চাটাকে নিয়ে একা থাকেন। এ সুযোগে বিভিন্ন সময় তার ভাসুর বিনয় ও তার পরিবার দীপাকে নানাভাবে হয়রানি করেন। তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। দীপা আমাকে জানিয়েছেন, গোপনে নাকি তার ভাসুর অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি হলে রাস্তা ব্যবহারের সুযোগ দিতে চেয়েছেন। বিষয়টির সমাধান হওয়া খুব জরুরি।
অভিযুক্ত বিনয় দাস বলেন, আমি কোনো ধরনের অনৈতিক প্রস্তাব দেইনি। মূল ঘটনা হচ্ছে, তাদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য কোনো রাস্তা নেই। তারা আমার বাড়ির জায়গার ওপর দিয়ে যাতায়াত করেন। আমি শুরু থেকে বলেছি, আমার জমির ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে হলে আমাকে জমির মূল্য দিতে হবে, না হয় আমাকে সমপরিমাণ জায়গা দিতে হবে।
দীপাকে তার ভাসুর কোনো অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছেন কি না এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, আমার কাছে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। যেহেতু বিষয়টির কোনো প্রমাণা নাই, তাই এ বিষয়ে আর কিছু বলতে চাচ্ছি না।
মোড়েলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। ঈদের পরে বসে বিষয়টির সমাধাণ করা হবে।