নগর সংবাদ।। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ -সন্তান নিয়ে টানাটানি।ভারতীয় মায়ের কাছে থাকবে তার দুই বছর আট মাস বয়সী শিশু। তবে তার বাবা সপ্তাহে তিন দিন নিয়ে যেতে পারবেন বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। অন্যদিকে গুলশান থানায় তার মায়ের পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। আগামী দুই মাস পর এ বিষয়ে অগ্রগতি জানাতে বলা হয়েছে। আর ওই সময় এ বিষয়ে শুনানি হবে।
যেহেতু ওই শিশুর বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়েছে তাই তার মা থাকবেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে। শিশুটি তার মায়ের কাছেই থাকবে। তার বাবা চাইলে তাকে সকাল ৯টায় নিয়ে যেতে পারবেন আর ফেরত দিয়ে যাবেন সন্ধ্যার আগে।
রাজধানীতে স্বামীর বাড়িতে বসবাসকারী ভারতীয় নারীকে তার শিশুসহ হাইকোর্টে সশরীরে হাজির হওয়ার ধার্য দিনে বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। অন্যদিকে বাবার পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মাসুদ রেজা সোবহান। আর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
এর আগে হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী শিশুসহ ওই নারীকে আদালতে হাজির করেন গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। এরপর শিশুর মা ও বাবার বক্তব্য শুনে এই আদেশ দেন আদালত। ভারতীয় ওই নারীকে আদালতে হাজির করতে ৯ আগস্ট নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
সেদিন শুনানি শেষে অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া বলেন, ‘ভারতের বিয়ে সংক্রান্ত ওয়েবসাইট থেকে হায়দরাবাদের সাদিকা শেখ নামে এক নারীকে পছন্দ করেন বারিধারার এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান। মেয়েটিও হায়দরাবাদের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান। ২০১৭ সালে হায়দরাবাদে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বসবাস শুরু করেন তারা। কয়েক মাস পর ঢাকায় চলে আসেন ওই দম্পতি।’
‘এরই মধ্যে ওই দম্পতির কোলজুড়ে আসে এক পুত্রসন্তান। তবে সুখের সংসারে তাদের একপর্যায়ে অশান্তি নেমে আসে। সাদিকাকে মারধরও করেন তার স্বামী। ভারতের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। বিষয়টি ভারতে মেয়েটির আত্মীয়স্বজনরা জানতে পারেন। এরপর ওই দেশ থেকে তাদের পরিবারের পক্ষে প্রথমে ভারতীয় হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হয়। তারপরও কোনো সমাধান না হওয়ায় পরে মেয়েটির বোন মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) কাছে আইনি সহায়তা চান।’
এরই ধারাবাহিকতায় গত ৮ আগস্ট সাদিকা শেখ ও তার শিশুসন্তানকে আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) পরিচালক ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষক লুলান চৌধুরী।