মাকে চেতনানাশক খাইয়ে আট মাস বয়সী শিশু দিঘীমনিকে চুরি করে সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্র। পরে বাবা-মা সেজে অপহৃত শিশুটিকে নিঃসন্তান দম্পতির কাছে বিক্রি করেন তারা।
সোমবার (৭ এপ্রিল) রায়গঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান শিশুটিকে তার মা মরিয়ম খাতুনের কাছে হস্তান্তর করেন। অপহৃত দিঘীমনি সিরাজগঞ্জ শহরের গয়লা মহল্লার বাপ্পী মণ্ডলের মেয়ে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার চর খাদুলী গ্রামের মৃত গোলদার হোসেনের ছেলে মো. কালাম শেখ (৪০) ও একই উপজেলার কুড়িগাঁতী গ্রামের মৃত রইচ উদ্দিনের ছেলে মো. হারুন অর রশিদ (৪৪)।
ওসি আসাদুজ্জামান জানান, বাপ্পী মণ্ডল পরিবারসহ রায়গঞ্জ উপজেলার রনতিথা গ্রামে বাদশা মিয়ার ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। গত ৩০ মার্চ দুপুরের দিকে ওই বাসায় এসে তার স্ত্রী মরিয়মকে চেতনানাশক মিশ্রিত ঘোল (মাঠা) পান করিয়ে শিশু দিঘিকে চুরি করে নিয়ে যায় কালাম শেখ ও তার সহযোগীরা। এরপর অপর আসামি হারুন অর রশিদ ও তার স্ত্রী ওই শিশুটির বাবা-মা সেজে যশোর জেলার এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে বিক্রি করে দেন।
এদিকে এ ঘটনায় ৩১ মার্চ রায়গঞ্জ থানায় কালাম শেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন শিশুটির মা মরিয়ম খাতুন। পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে চাঞ্চল্যকর এই অপহরণ মামলাটি তদন্তে চৌকস একটি টিম গঠন করা হয়। মামলার তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তি ও নিখুঁত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ৪ এপ্রিল রংপুরে অভিযান চালিয়ে এজাহারনামীয় আসামি কালাম শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে ৫ এপ্রিল রায়গঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় অপর আসামি হারুন অর রশিদকে।
এরপর হারুন অর রশিদকেও অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার দেওয়া তথ্যমতে যশোর জেলার কোতোয়ালি থানার তালবাড়িয়া গ্রামের মো. সামিউলের বাড়ি থেকে অপহৃত শিশু দিঘীমনিকে উদ্ধার করা হয়।
ওসি আসাদুজ্জামান আরও বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের দুজনকেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আরও যারা জড়িত রয়েছেন তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।