পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছন, বায়ু দূষণ রাতারাতি কমানো সম্ভব নয়। তবে বায়ু দূষণের কারণে সৃষ্ট জনদুর্ভোগ কমাতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি কোনো মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিতেও পারবেন না বলে মন্তব্য করেছেন এই উপদেষ্টা।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর আব্দুল গণি রোডে বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ, ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসন এবং বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আয়োজিত আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সমন্বয়হীনতা যেন না থাকে, সেজন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করে দেওয়া হয়েছে। বায়ুদূষণে ঢাকা শীর্ষে এটা এই বছরই প্রথম শুনেননি। এটা গত ১২ বছর ধরে শুনে আসছেন, ৬-৭ বছর ধরে শীর্ষে শুনছেন। বায়ু দূষণ নিয়ে ২০১৫ সাল থেকে আদালতে লড়াই করেছি, এখন সরকারে এসে কাজ শুরু করার সুযোগ পেয়েছি। ২০১৫ সালে আদালত বলেছিলেন, একটি এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান দিতে। এত বছর কিছু হয়নি। এখন এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান ফাইনাল হয়েছে। যে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, তারা জনদুর্ভোগ কমাতে কাজ করবে। বায়ু দূষণ কমানো এক মাস, দুই মাস, এক বছরের ব্যাপার নয়। আমরা এখানে মিথ্যা কোনো প্রতিশ্রুতি আপনাদের দিতে পারবো না। ধুলো, গাড়ির কালো ধোঁয়া, ইটভাটা, স্টিল মিল থেকে যে দূষণটি হচ্ছে, সেগুলো কমিয়ে জনদুর্ভোগ কিছুটা কমানোর চেষ্টা করতে পারি। সেটার জন্য টাস্কফোর্সকে কয়েকটি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা শহরের বিভিন্ন রোড ডিভাইডার বা রাস্তার পাশের অনাবৃত জায়গা থেকে ধুলা ওড়ে। ওইটাকে নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে ঘাস লাগিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। রাস্তায় ঝাড়ু দিয়ে ধুলা একটি কোনায় ফেলে রাখা হয়। ওইটা আবার গাড়ির চাকায় সারা ঢাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এটাকে নিয়ন্ত্রণ করার কথা বলা হয়েছে। অনেক ভাঙা রাস্তা আছে, যেখান থেকে ধুলা ওড়ে। সেগুলোও মেরামত করার জন্য বলা হয়েছে।
আশুলিয়া থেকে বেশিরভাগ ইট ভাটার ধোঁয়া আসে। আশুলিয়াকে নো ব্রিক ফিলড জোন ঘোষণা করা যায় কি-না ভাবা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, নিয়মিত পানি ছিঁটানো হবে যদিও পানি ছিটিয়ে বায়ু দূষণ কমে না। এতে জনদুর্ভোগ কিছুটা কমে।
তিনি আরও বলেন, আমরা মাস্ক পরার কথা বলছি। যাদের পক্ষে সম্ভব তাদের বাসায় এয়ার পিউরিফায়ার রাখার কথা বলছি। এটার অনেক দাম। তাই এসব পণ্যের ট্যাক্স কমিয়ে দেওয়ার জন্য এনবিআরকে বলা হয়েছে। আশা করি আগামী সপ্তাহে তারা কোনো ভালো সংবাদ আমাদের দেবে। তখন অনেকের সামর্থ্যের মধ্যে এয়ার পিউরিফায়ার চলে আসবে বলে আশা করি।
এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বক্স চৌধুরী, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হকসহ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণায়ের অন্যান্য কর্মকর্তা, পরিবহন মালিক সমিতি ও ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।