অটোরিকশায় যাওয়ার সময় মায়ের কোলে নিরাপদেই ছিল শিশু মারিয়া আক্তার যুঁথি। কিন্তু পেছন থেকে যাত্রীবাহী একটি বাস ওই অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়।
মুহূর্তের মধ্যেই মায়ের কোল থেকে শিশুটি ছিটকে পড়ে রাস্তায়। পরে ওই বাসটিই শিশুটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় সাত বছরের ছোট্ট শিশু যুঁথি।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহী মহানগরের ভদ্রা গোলচত্বর মোড়ে মর্মান্তিক এই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। বাসচাপায় নিহত যুঁথি মহানগরের মেহেরচণ্ডী এলাকার হাসান মোল্লার মেয়ে।
ঘটনার পর চালক বাসটি রেখে পালিয়ে গেছেনি। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই বাসটিকে জব্দ করে। ঘটনার পর ক্ষুব্ধ জনতা ওই বাসসহ আরও কয়েকটি যানবাহনে ভাঙচুর চালায়। এতে ভদ্রার ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এরপর পুলিশ নিহত যুঁথির মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাটির চালক ছিলেন নিহত যুঁথির নানা। যুঁথিকে কোলে এবং পাশে আরেক মেয়েকে নিয়ে অটোরিকশায় বসেছিলেন তাদের মা। তারা মেহেরচণ্ডীর দিক থেকে এসে ভদ্রামোড়ের গোল চত্বরে রিকশায় পার হচ্ছিলেন। এ সময় তালাইমারীর দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী একটি বাস ওই অটোরিকশার পেছনে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে মায়ের কোল থেকে যুঁথি ছিটকে সড়কের ওপর পড়ে যায়। তখনই বাসের চাকা যুঁথির শরীরের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই যুঁথির মৃত্যু হয়। চোখের সামনেই নিজের মেয়েকে চাকায় পিষ্ট হতে দেখেন মা। যুঁথির এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে তার মা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। ঘটনার পর ছোট্ট আরেক মেয়েকে নিয়ে মারিয়ার মরদেহের পাশেই রাস্তায় বসেছিলেন তিনি।
রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ জানান, পদ্মা নামের যাত্রীবাহী ওই বাসটি নওগাঁ জেলার। দুর্ঘটনার পর বাসটি জব্দ করা হয়েছে। তবে এর চালক-হেলপার পালিয়ে গেছেন। পরিস্থিতি এখন শান্ত। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হবে বলে জানান তিনি।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, এখন ওই সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। দুর্ঘটনার পর বাসটি জব্দ করা হয়েছে। এর চালক-হেলপার পালিয়ে গেলেও তাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। শিগগিরই তারা ধরা পড়বে। এ ঘটনায় মামলা হবে। মরদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।