বিএনপি-জামায়াতের ডাকা তিনদিনের অবরোধের প্রথম দিনে আড়াইহাজারের পাচরুখিতে বিএনপি-পুলিশ ও আওয়ামী লীগের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়।এতে তিন পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে।এসময় অবরোধকারীরা ২টি বাসে ভাংচুর চালায় ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের নেতৃত্বে মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল পৌনে ৯টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককের পাঁচরুখীতে বিএনপি নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে।
বিএনপি নেতা-কর্মীরা সড়কের উপর গাছের গুঁড়ি, সিমেন্টের পিলার ফেলে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে। এসময় লাঠিসোটা হাতে তারা সরকার বিরোধী শ্লোগান দিতে থাকে।
একই সময়ে বিএনপির সন্ত্রাস নৈরাজ্যের প্রতিবাদে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মিছিল বের করলে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পালটা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে ত্রিমুখী সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় একটি বিআরটিসি বাসসহ দুটি বাস ভাঙচুর করে অবরোধকারীরা।
সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হলে টিয়ারসেল ও রবার বুলেট ছুড়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সকাল সোয়া ১০টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এলে মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়।
আহতদের মধ্যে পুলিশ সদস্য হলেন নুরুল হক (৫০)। বাকি দুজন আড়াইাজার থানার সাতগ্রাম ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল মোল্লা (৪৫) ও সালতা ইউনিয়নের তাঁতীলীগের সাবেক সহসভাপতি আলআমিন চৌধুরী (৩৫)কে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আড়াইহাজার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান উল্লাহ জানান, মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) বিএনপি নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা হাতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ব্যারিকেড দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা অবরোধ করছেন। তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা চালায় তারা। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সড়কে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, আড়াইহাজারের পাঁচরুখী এলাকায় ঢাকা – সিলেট মহাসড়কে বিএনপি নেতাকর্মীরা টায়ার জ্বালিয়ে তারা প্রতিবন্ধিতা সৃষ্টি করেছিল। আমাদের পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা কিন্তু তাদেরকে সেখানে গিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার সময়ে তাদের দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে ও ককটেল বিস্ফোরণে তোমাদের তিন পুলিশ সদস্য গুরুতরসহ ৬জন আহত হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সেখানে পর্যন্ত পরিমানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের বর্তমানে সার্বিক পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
জেলা বিএনপির মিডিয়া সেল জানায়, সংঘর্ষে বিএনপির কমপক্ষে ১৭ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ জানান, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাদের শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচিতে অর্তকিত হামলা ও গুলিবর্ষণ করে আমাদের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীদের আহত করেছে। পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দিয়ে হামলা ও নির্যাতন করে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম থেকে আমাদেরকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। এই স্বৈরাচারী সরকারের পতন না ঘটিয়ে আমরা রাজপথ ছাড়বো না।