নগর সংবাদ।।নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আমরা আজ কী করছি। স্মরণ, শোক সভা, খাওয়া দাওয়ার আয়োজন।
এগুলো থাকবে তো, যদি নেত্রীর ওপর আঘাত আসে! আমি আমার বাবাকে দেখেছি। যে রাতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়, আমার বড় ভাই নাসিম ওসমান অস্ত্র জোগাড় করে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারের জন্য বেরিয়ে পড়ল। একাত্তরে আমার বাবাকে দেখেছি পাগলের মত রাইফেল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে। তখন আদর্শিক কর্মী ছিল বেশি। এখন আদর্শিক কত পার্সেন্ট আর হাইব্রিড কত পার্সেন্ট সংশয় আছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে আমাদের ভবিষ্যতকে হত্যা করা হয়েছিল।
বুধবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, গত পরশুদিন শোক দিবসের আলোচনা সভায় জাতির পিতার কন্যা কিছু কষ্টের বহিঃপ্রকাশ করেছেন। আমরা এগুলো আগেও শুনেছি। আজ তিনি এটা প্রকাশ্যে বলেছেন। জাতির পিতার কন্যা বলছেন, এত বড় আওয়ামী লীগ সেদিন কেউ প্রতিবাদ করল না কেন। বঙ্গবন্ধুর লাশ সেখানে পড়ে রইল। তিনি আরেকটি কথা বলেছেন সেটা হল, আমার পিতার লাশ কেউ ধরতে আসেনি।
তিনি বলেন, যখন ২১ আগস্ট জাতির পিতার কন্যার ওপর হামলা করা হল। এরপর তিনি আমেরিকা গিয়েছিলেন। তিনি কানে শুনতে পারতেন না। আমিও তখন বাইরে ছিলাম।
তিনি আরও বলেন, একুশে আগস্ট বোমা হামলার পর যখন আপা আমাকে ফোন করলেন, আমি কোন কথা বলতে পারছিলাম না। তখন শুধু কাঁদছিলাম। তখন তিনি বললেন, তোকে মারতে গিয়ে বিশজন মারল। আজ আমাকে মারতে গিয়ে চব্বিশজন মারল। আমরা হৃদয় থেকে রাজনীতি করি। আজ জেলা মহানগর ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে বলতে চাই, সামনে সময় খুল ভালো নয়। আমার কারণে যদি দল ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রয়োজনে আমাকে দল থেকে বের করে দিন। সবাই প্রস্তুতি নেন। এলাকায় এলাকায় ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে যে কোন্দল আছে তার নিরসন করুন। দলকে সুশৃঙ্খল করুন।
বেঁচে যাওয়ার অপরাধে শেখ হাসিনাকে একুশবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। কোথায় ছিল মানবাধিকার, বিচারপতিরা। আজ লজ্জা লাগছে। আমার মনে হয় নারায়ণগঞ্জে রাজনীতির চেয়ে অপরাজনীতি বেশি হচ্ছে। কিছু লোক বড় বড় পদ হাতিয়ে নিয়েছে। সবাই মিলে দল করুন। আজ সবাই মিলে দল করলে হয়তো নেত্রীকে বলতে পারতাম, পঁচাত্তরের মত কিছু হলে আমরা কিছু করতে পারব।
তিনি বলেন, আজ এত স্লোগান এত নেতা এত কথা। কোথায় ছিল সেদিন সবাই। তিনি বলেছেন, তার মৃত্যুর পরও কিছু হবে তিনি আশা করেন না। সিনিয়র নেতারা এখানে আছেন। আমার প্রশ্ন, বঙ্গবন্ধু কন্যার এই আক্ষেপ আমরা আসলে করছি কী। বক্তব্য দিচ্ছি সবাই, যেন আমরা পৃথিবী জয় করে ফেলছি। আমাদের প্রস্তুতি কী, আমরা কী করছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করছি না পদ পদবি বাগিয়ে নিচ্ছি। এটা আমাদের উপলব্ধি করতে হবে।
এসময় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, আইনজীবী সমিতির সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক রবিউল আমিন রনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।