নগর সংবাদ।।মাথা গোঁজার ঠাঁই পাচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যমজ সন্তান জন্ম দেওয়া রুমা আক্তার। মিলবে মাতৃত্বকালীন ভাতাও।
শনিবার (২ জুলাই) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক শাহগীর আলম।
তিনি বলেন, রুমা আক্তারকে নিয়ে সংবাদ হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নজরে আসে। ওই নারীকে উপজেলার নারায়ণপুর এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি ঘর দেওয়া হবে। তার মাতৃত্বকালীন ভাতার ব্যবস্থাও করা হবে। তাকে সুবিধাভোগীর আওতায় এনে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। আত্মনির্ভরশীল হতে সেলাই কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, এরই মধ্যে আখাউড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) গিয়ে রুমাকে দেখে এসেছেন এবং নগদ দুই হাজার টাকার পাশাপাশি ফল দিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হবে।
ভোলার লালমোহন উপজেলার মেয়ে রুমা আক্তার ছোটবেলায় সৎমায়ের অত্যাচারে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন। নিজের নির্দিষ্টভাবে বেড়ে ওঠার জায়গা ছিল না, ছুটে চলেছেন এখানে সেখানে। গত কয়েক বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া কেল্লাশহীদ মাজারে আসার সুবাদে বিয়ে হয় হবিগঞ্জের ইব্রাহিম মিয়া নামের এক যুবকের সঙ্গে। এক কন্যাসন্তান নিয়ে ভালোই কাটছিল তার সংসার।
দ্বিতীয়বার গর্ভধারণের পর প্রায় নয় মাস আগে কন্যাকে নিয়ে চলে যান স্বামী ইব্রাহিম। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও কোথাও স্বামী-সন্তানকে পাননি রুমা। মাথায় বাজ পড়া রুমা ভাড়া বাসা ছেড়ে আশ্রয় নেন আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে। অন্যের কাছে হাত পেতে চলতো পেট। সুমি আক্তার নামে এক নারীকে মা ডাকতেন। সেই নারী ২৯ জুন রাত ১১টার দিকে রুমাকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানেই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় দুই ছেলেসন্তানের জন্ম দেন রুমা। তাদের নাম রাখা হয় হাসান-হোসেন।
৩০ বছর বয়সী রুমা আক্তারের কোলজুড়ে আসা ফুটফুটে সন্তানদের নিয়ে ছিলেন দুশ্চিন্তায়। নিজে এখানে সেখানে বেড়ে উঠলেও ছেলেসন্তানদের কীভাবে লালন পালন করবেন সে নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন তিনি। এ নিয়ে শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। এছাড়া বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমেও তার বিষয়টি উঠে আসে। এসব সংবাদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নজরে এলে রুমার দায়িত্ব নিতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়।
রুমা বলেন, ‘আমার কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই, স্টেশনে আশ্রয় নিয়েছি। নবজাতকদের নিয়ে কোথায় যাব, জানি না। শুনেছি সরকারিভাবে আমাকে ঘর দেওয়া হবে। যারা এসব ব্যবস্থা করে দেবেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’