কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় ভাড়া বাসা থেকে মা ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকালে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের পাশে উপজেলার রামপুর এলাকায় একটি বাড়ির তৃতীয় তলার কক্ষ থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, ঋণের চাপ সহ্য করতে না পেরে তাঁরা বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। মৃত দুজন হলেন মীর হোসেনের স্ত্রী জাহেদা আক্তার (৩৫) এবং এ দম্পতির মেয়ে মিশু আক্তার (১৪)। জাহেদা স্থানীয় একটি জুতা কারখানায় চাকরি করতেন। মীর হোসেন পেশায় রাজমিস্ত্রি। তাঁদের গ্রামের বাড়ি ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার জয়নগর গ্রামে।
বাড়ির মালিক আবুল খায়ের বলেন, ‘১২ জুলাই ওই দম্পতি বাসা ভাড়া নেন। গতকাল মধ্যরাতে জুতার কারখানার ফোরম্যান ইব্রাহিম ফোন করে জানান, জাহেদা মারা গেছেন। পরে তিনতলায় গিয়ে দেখি, ঘরের একটি কক্ষে মা-মেয়ের নিথর দেহ পড়ে আছে। জানতে পারি, ওই সময় মীর হোসেন ছাদ থেকে লাফিয়ে পালিয়ে গেছেন। ওই কক্ষে বিষের বোতল পাওয়া গেছে।’ স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ করে তা শোধ করতে না পেরে সম্প্রতি পরিবার নিয়ে এলাকা ছাড়েন মীর হোসেন। এরপর বুড়িচংয়ে এসে আবুল খায়েরের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। পারিবারিক কলহ ও ঋণের চাপে জাহেদা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। মেয়ে মিশু স্থানীয় একটি স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল মালিক বলেন, ঘটনাস্থল থেকে বিষের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহেও বিষপানের আলামত রয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। মরদেহ দুটি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। সাইফুল মালিক আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পরিবারটির প্রায় ১৫ লাখ টাকার ঋণ ছিল। ঘটনার পর মীর হোসেন পালিয়ে গেলেও পুলিশের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ রাখছেন। তিনি জানিয়েছেন, আতঙ্কে তিনি পালিয়ে গেছেন। তাঁর স্ত্রী বড় মেয়েকে নিয়ে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না।