ভারতীয় চলচ্চিত্রের একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাবাসসুম আর নেই। তিনি ৭৮ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) মৃত্যুবরণ করেছেন। ভারতীয় গণমাধ্যম ‘ই-টাইমস’-এ পরিবেশিত এক সংবাদে এ খবর জানা গেছে।
তাবাসসুম শিশুশিল্পী হিসেবে সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি টেলিভিশন উপস্থাপক হিসেবে দর্শকপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন। তাবাসসুমের ছেলে অভিনেতা হোসাং গোভিল তার মায়ের মৃত্যুর খবর ভারতীয় গণমাধ্যমের কাছে নিশ্চিত করেছেন।
হোসাং গোভিল বলেন, ‘মা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার রাত ৮টা ৪০মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। তবে তিনি সুস্থ ছিলেন। ১০ দিন আগে আমাদের শোয়ের শুটিংও করেছিলাম। পরের সপ্তাহে আবারও শুটিংয়ের কথা ছিল। আচমকাই ঘটল এ রকম।’
হোসাং গোভিল আরও বলেন, ‘হজমের সমস্যায় ভুগছিলেন মা। মুম্বাইয়ের এক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি। শুক্রবার ফের তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। দুমিনিটের মধ্যে দুবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল মায়ের।’
উল্লেখ্য, শিশুশিল্পী হিসেবে সিনেমার জগতে প্রবেশ করেন তাবাসসুম। তাই তিনি বেবি তাবাসসুম নামে পরিচিত ছিলেন।
১৯৪৭ সালে শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম ছবিতে কাজ করেন তাবাসসুম। ১৯৭২ সালে দূরদর্শনের জনপ্রিয় টক শো ‘ফুল খিলে হ্যায় গুলাশন গুলশান’ সঞ্চালনা শুরু করেন। সেই শোয়ের মাধ্যমেই জনপ্রিয় হন তাবাসসুম। তিনি ‘মেরা সুহাগ’ (১৯৪৭), ‘মঁঝধার’ (১৯৪৭), ‘বড়ি বেহেন’ (১৯৪৯) ও ‘দিদার’ (১৯৫১) সিনেমায় অভিনয় করে দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন। সব শেষ তিনি ‘স্বর্গ’ ছবিতে ১৯৯০ সালে অভিনয় করেছিলেন।
তাবাসসুম ১৯৪৪ সালের ৯ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা অযোধ্যানাথ সচদেব ছিলেন একজন ভারতীয় মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক এবং লেখক। তার মা আসগরী বেগম। তার মা মুসলিম হওয়ায় বাবা তার মায়ের ধর্মীয় অনুভূতি মাথায় রেখে তার নাম তাবাসসুম রেখেছিলেন। অন্যদিকে তাবাসসুমের মা তার বাবার ধর্মীয় অনুভূতি মাথায় রেখে তার নাম কিরণ বালা রেখেছিলেন। বিবাহের পূর্বে দলিল অনুসারে তার সরকারি নাম কিরণ বালা সচদেব রাখা হয়।
তাবাসসুম শিশু অভিনেত্রী হিসেবে নার্গিস ‘মাঝঁধার (১৯৪৭)’ এবং ‘বড় বহেন (১৯৪৯)’-এ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে এসেছিলেন। পরে নীতিন বোস পরিচালিত ‘দিদার (১৯৫১)’ সিনেমায় নার্গিসের শৈশব চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। জনপ্রিয় গান ‘বচপন কে দিন ভুলা না দেনা’ (যেটি লতা মঙ্গেশকর এবং শমসাদ বেগম গেয়েছিলেন) । এ গানটিতে তিনি ঠোঁট মিলিয়েছিলেন।
টিভি অভিনেতা অরুণ গোভিলের বড় ভাই বিজয় গোভিলের সঙ্গে তাবাসসুম বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।