ওষুধ ও হার্টের রিংয়ের দাম কমাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যখাতের সব অসঙ্গতির দায় মাথায় নিয়েই কাজ করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ওষুধ ও হার্টের রিং, উভয়ের দাম নির্ধারণেই বৈঠক বসেছে। তবে দাম কমাতেই হবে। স্বাস্থ্যখাতে এত অসঙ্গতি, এর কোনোটার দায়ই মন্ত্রী হিসেবে এড়ানো সম্ভব না। দায় মাথায় নিয়েই কাজ করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে, যেকোনো দিন মন্ত্রী হিসেবে অভিযানে যাওয়া হবে।
অভিযানে অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে চিকিৎসাসেবা নেওয়া মানুষের ভোগান্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভুল জায়গায় চিকিৎসা নেওয়ার চেয়ে চিকিৎসা না নেওয়া ভালো এবং সঠিক জায়গায় চিকিৎসা নেওয়া উচিত।
ওষুধ খাতে দাম নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সিন্ডিকেটের যে অভিযোগ রয়েছে, এ নিয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, যেভাবে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, তাতে আমি সন্তুষ্ট। যে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, সেটা যথার্থ। এতে দুই পক্ষের জন্যই সহনীয়। যে কারণে নতুন করে দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়ায় আমরা যাইনি। যেটা চলছে, সেটা চলবে। যদি ভবিষ্যতে দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হয়, আমরা বৈঠক করে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
কেউ দাম বাড়িয়ে বিক্রি করলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, প্রশ্নে তিনি বলেন, এখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ব্যবস্থা আছে। আইনে শাস্তির ব্যবস্থা আছে। কার্ডিয়াক সেন্টারের বিশেষজ্ঞরা আজকের বৈঠকে ছিলেন, তাদেরও অনুরোধ করেছি মনিটরিং করতে। কারণ সরকারের একার পক্ষে সব কিছু করা সম্ভব হবে না। এটা আমাদের সবার সম্মিলিত প্রয়াস লাগবে।
ওষুদের দাম চল্লিশ শতাংশ বেড়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, এটা কোনো কোনো ক্ষেত্রে সঠিক, কোনো ক্ষেত্রে সঠিক না। সঠিক না এ কারণে যে কিছু কিছু ওষুধের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। কিছু কিছু ওষুধের দাম ফ্লেক্সিবল (নমনীয়) আছে। সেটার দাম নির্ধারণে আজ আমরা বৈঠক করতে পারিনি। তবে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে বৈঠক করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, বর্তমানে ডলারের দাম বেড়ে গেছে। আর ওষুধের কাঁচামাল বিদেশ থেকে আনতে হয়। সেই অনুযায়ী, কিছু দামে সমন্বয় করা হয়েছে। তবে অত্যবশ্যকীয় ওষুধের দাম এক পয়সাও বাড়ানো হয়নি। ১১৭টি ওষুধের দাম সরকার আগে যা ঠিক করে রেখেছিল, সেগুলো আমরা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছি। তবে যেসব পণ্য আমরা বিদেশি থেকে আনি, সেগুলোর দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। সে ক্ষেত্রে কিছু সমন্বয় করা হয়েছে। তবে স্বাভাবিকভাবে বেশি বাড়তে দেওয়া হয়নি।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আরও বলেন, যেসব ওষুধ না খেলে মানুষ মারা যেতে পারে, সেই ১১৭টি ওষুধের দাম এক পয়সাও বাড়ানো হয়নি। এর বাইরে কিছু নতুন নতুন ওষুধ এসেছে। সেগুলোর দাম বাড়ছে, আমি স্বীকার করি। তবে সেটা ডলারের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে। এর বাইরে কোনো ওষুধের দাম বৃদ্ধির সুযোগ আমরা দিইনি।