মাহবুব আলম: গত শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩) দুপুর ১২ টায় দাউদকান্দি হাইওয়ে থানায় পরিবহন চালক ও হেলপারদের নিয়ে এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিয়নের এসপি মো: খাইরুল আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এই সময় তিনি বলেন, মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ও পণ্য পরিবহন এবং মানুষের চলাচল নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে হাইওয়ে পুলিশ সদা জাগ্রত থেকে কাজ করে যাচ্ছে।
এই জন্য সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ সঠিক ভাবে বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নাই। তিনি আরো বলেন, মহাসড়কে ফিটনেস বিহীন কোন গাড়ী চলবে না। মহাসড়কে কাউকে অবৈধভাবে গাড়ি চালাতে দেওয়া হবেনা। মহাসড়কে যেন গাড়ী উল্টো পথে চলতে না পারে এ ব্যাপারে নির্দেশনা প্রদান করেন। পথচারীরা যেন ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার করে সে ব্যাপারে সচেতনতা মূলক কর্মসূচি গ্রহণ করার জন্য অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশনা প্রদান করেন। মহাসড়কে একসাথে দ্রুত গতির যানবাহনের পাশাপাশি ধীরগতির যানবাহনের চলাচল, ফিটনেস বিহীন গাড়ি, এলইডি বাতি লাগানো,
অকারণে হাইবিম জ্বালিয়ে রাখা, সিটবেল্ট না বেধে গাড়ি চালানো, বেপরোয়া ভাবে অভারটেকিং সহ নানা কারণে মহাসড়কে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা ঘটে অনেক প্রাণহানি সহ হতাহতের ঘটনা ঘটছে। তিনি আরো বলেন, একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সড়ক দূর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫৫ জন মানুষ মারা যাচ্ছে এবং বছরে ১২ হাজার নিহত ও ৩৫ হাজার মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করছে। কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো: খাইরুল আলম আরো বলেন, দেশের সকল মানুষ ড্রাইবার না বা সবাই গাড়ি চালায় না। মানুষকে যেহেতু যানবাহনে চড়ে একস্থান হতে অন্যত্র যেতে হয়, সেকারণেই ড্রাইভার হেলপারদের হাতেই মানুষের জীবন। কোন অবস্থাতেই যেন নিজেদের সহ যাত্রীদের জীবন শেষ না হয়ে যায় সেই বিষয়টি মাথায় রেখে আপনাদেরকে অধিক সচেতন হতে হবে।
হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম আরো বলেন, পৃথিবীতে দূর্ঘটনা ছিলো, আছে এবং থাকবে। পৃথিবীর উন্নত দেশেও বিভিন্ন কারনে দূর্ঘটনা ঘটে; এমনকি ট্রেন, নৌ-যান এবং উড়োজাহাজ পর্যন্ত যান্ত্রিক ত্রুটি বা নানাবিধ কারণে মুখোমুখি সহ বিভিন্নভাবে দুর্ঘটনা ঘটছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ফিটনেস বিহীন গাড়ীর জন্য যেন দূর্ঘটনা না ঘটে ,এই জন্য আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি হাইওয়ে পুলিশের সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, কোন অন্যায়ের কাছে মাথানত করবেন না। কোন অন্যায় সুযোগ গ্রহন করবেন না। ১৮ বছরের নিচে কেউ যেন গাড়ি চালাতে না পারে সে ব্যাপারে কাজ করার নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি হেলপার ও চালকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি মারা গেলে আর পৃথিবীতে আসবেন না, আপনার বিকল্প আপনার পরিবার আর কাউকে পাবে না।
আপনার সন্তান আপনাকে কাছে পাবে না; আপনাকে ছাড়াই বড় হবে; তাই আপনাকেই ভেবেচিন্তে গাড়ী চালাতে হবে। পুলিশ সুপার আরো বলেন, যে কোন দূর্ঘটনায় বড় অংশ ড্রাইভার হেলপাররাই মারা যাচ্ছে; তাই অন্তত নিজ পরিবারের কথা মাথায় রেখে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দেন। তিনি আরো বলেন, এডিপি’র অর্থায়নে ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়ক সিসিটিভি ক্যামেরায় আওতায় নিয়ে আসার কাজ চলমান আছে। ফলে কোন দূর্ঘটনা ঘটলে কার অন্যায় সেটা সহজে সনাক্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
ড্রাইভার ও হেলপারদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির শেষে দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার পুকুরে এক সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এ সময় হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিয়নের এসপি মো: খাইরুল আলম বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার রাজিউর রহমান, কুমিল্লা জেলার পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি ও বাংলাদেশ পরিবহন মালিক গ্রুপের সহসভাপতি অধ্যাপক কবির আহাম্মদ চৌধুরী, দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম, দাউদকান্দি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাম্মেল হক, সাংবাদিক হাবিবুর রহমান, দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা কমিউনিটি পুলিশিং সভাপতি রকিব উদ্দিন রকিব, সাধারণ সম্পাদক মোসা: সেলিনা আক্তার, নিরাপদ সড়ক চাই দাউদকান্দি শাখার সভাপতি লিটন সরকার বাদল ও সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন প্রমুখ।