মাইগ্রেন মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের এক বিশেষ ধরনের রোগ, যার প্রধান উপসর্গ তীব্র মাথাব্যথা। একবার ব্যথা শুরু হলে ৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে তারা জানেন এই ব্যথা কতটা মারাত্মক।
মাইগ্রেনের ব্যথায় সাধারণত ‘পেইনকিলার’ জাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়। এই ব্যথার ওষুধ দীর্ঘদিন ধরে খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই মাইগ্রেনের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে ঘরেই তৈরি পানীয় পান করতে পারেন, যা মাইগ্রেনের যন্ত্রণায় আরাম দেবে।
আসুন জেনে নেওয়া যাক কোন কোন পানীয় মাইগ্রেনের ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে
পুদিনা চায়ে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা স্নায়ুর উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। পুদিনায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মাথা ও ঘাড়ের পেশি শিথিল রাখে। মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।
গরম পানিতে কয়েকটি পুদিনা পাতা ফুটিয়ে সেই পানীয় পান করুন। মাইগ্রেনের ব্যথা কমে যাবে।
২. ক্যাফেইনমুক্ত কফি
খেজুর বীজের কফি ক্যাফেইনমুক্ত কফি। এটি অ্যান্টি অক্সিড্যান্টে ভরপুর। এতে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক, ম্যাগনেশিয়াম ও আয়রন আছে, যা মাইগ্রেনের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে।
এই কফি বানাতে খেজুরের বীজ পরিষ্কার করে নিতে হবে। এবার এই বীজগুলো তাওয়ায় ভেজে নিতে হবে। ভাজা বীজগুলা ঠান্ডা করে কফি গ্রাইন্ডারে মিহিভাবে চূর্ণ করে নিলেই কফি হয়ে যাবে। এবার প্রয়োজনমতো গরম পানিতে খেজুরের বীজের কফি মিশিয়ে পান করতে পারবেন।
৩. গ্রিন টি
মাইগ্রেন ও মাথাব্যথায় আরাম পেতে গ্রিন টি পান করতে পারেন। গ্রিন টিতে থাকা পলিফেনল, স্যাপোনিন, ভিটামিন মাথা ব্যথা ও মানসিক চাপ কমাতে বিশেষ ভাবে কাজ করে। এই পানীয়টি মানসিক চাপ ও উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখে। সেই সঙ্গে গ্রিন টির তাজা ঘ্রাণ মনকে রাখবে ফুরফুরে।
মাইগ্রেনের অন্যতম কারণ শরীরে পানির ঘাটতি, অর্থাৎ পানিশূন্যতা। পানিশূন্যতায় শরীরে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়, মাথায় চাপ বাড়ে এবং ব্যথা শুরু হয়। মাইগ্রেনের সময় অনেকের বেশি ঘাম বা বমি হয়।
তাই দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে ব্যথা উপশম হবে এবং নতুন করে মাইগ্রেন প্রতিরোধ করাও সম্ভব হবে।
৫. আদা-চা
মাইগ্রেনের ব্যথাসহ যেকোনো মাথাব্যথা এমন কি মানসিক চাপে আদা-চা বেশ কার্যকর। আদায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহনাশক গুণ রয়েছে, যা মাইগ্রেনের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। পানিতে কয়েক টুকরো আদা ফুটিয়ে পানীয় তৈরি করে নিন।
চায়ের মতো করে সকাল-সন্ধ্যায় এ পানীয় পান করুন। এটি বমি এবং বমি বমি ভাব কমাতেও সাহায্য করে।
সবুজ শাক-সবজির স্মুদি মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে পারে। সবুজ শাক-সবজি থাকা বিটা-ক্যারোটিন ও ম্যাগনেসিয়াম কম মাত্রা মাইগ্রেনের মাথাব্যথা তীব্রতা কমাতে পারে।
সবুজ শাক-সবজির মতো কিছু ফলের রসে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকে। ইউএস ফুড ডেটা সেন্ট্রাল অনুসারে, এক গ্লাস কমলার রসে ১১ মিলিগ্রাম এবং আঙ্গুরের রসে ১০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম থাকে।
ফলের রসে থাকা ম্যাগনেসিয়াম শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে এবং মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।