মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট একজন অসুস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধার আকুল আবেদন
– মাহবুব আলমঃ
ঢাকায় এক বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি বেসরকারি রেলওয়ের অনেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের বসতবাড়ি ও দোকান অধিগ্রহণ না করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানোসহ মানববন্ধন ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে মুক্তিযোদ্ধারা। সমাবেশে মুক্তিযোদ্ধারা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো কমান্ডার এমএ রশীদের বর্তমানে দুইটি কিডনিই নষ্ট। প্রতিনিয়ত ডায়ালাইসিস করতে হয়। এই অবস্থায় তার শেষ সম্বল অধিগ্রহণ করে ঠিকানাহীন না করতেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছে। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের সাবেক নেতৃবৃন্দ বাড়ি রক্ষায় পৃথক বিবৃতিও দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠিতে বাড়ি ও দোকান রক্ষার আবেদন জানান ২নং সেক্টরের বৃহত্তর ঢাকার যুদ্ধকালীন কমান্ডার এমএ রশীদ। লিখিত আবেদনে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের আহ্বানে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়ে রণাঙ্গনের মাঠে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি বাসাবো মাঠে বঙ্গবন্ধুর নিকট অস্ত্র সমর্পণ করেন। মুক্তিযোদ্বাদের সংগঠন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের মহাসচিব প্রশাসনের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও দুর্দিনে, মহান মুক্তিযুদ্ধে তাদের পরিবারের রয়েছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বঙ্গবন্ধু তাঁর কারাগারের রোজনামচা বইয়ে উল্লেখ করেছেন (পৃষ্ঠা ২০২) তার বাবা প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা কাদের ব্যাপারি ও তাঁর পরিবারের আত্মত্যাগের কথাও। প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে এই মুক্তিযোদ্ধা নানা জটিল রোগে আক্রান্ত প্রতিনিয়ত ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছে। কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে সপ্তাহে তিনবার ডায়ালাইসিস করতে হয় এই মুক্তিযোদ্ধাকে । এ ছাড়াও নিজের চিকিৎসার খরচ চালানো এবং ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচও চালাতে হচ্ছে। চিঠিতে এমএ রশীদ বলেছেন, গত ২৭ জুন ঢাকা জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে আমাকে একটি নোটিস দেওয়া হয়। সেখানে আমার শেষ সম্বল বসতবাড়ি ও দোকান ঘর অধিগ্রহণের কথা বলা হয়েছে । যেখানে মেট্রোরেল যাবে বিমানবন্দর থেকে মৌচাক, মালিবাগ রাজারবাগ হয়ে কমলাপুর। আশপাশে সরকারি-খালি জায়গা আছে। প্রভাবশালী মহলের সম্পত্তি রক্ষা করার জন্য গোপনে অধিগ্রহণ বাণিজ্য করে আমার মতো একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার শেষ সম্বল বসতবাড়িঅধিগ্রহণ মৃত্যু পরোয়ানা মনেকরি। তিনি আরও বলেন, সরেজমিনে পরিদর্শন করলে সবই দেখতে পাবেন। এই একতরফা প্রস্তাবে আমরা হতবাক ও মর্মাহত। আমাদের একমাত্র সম্পত্তি অধিগ্রহণ করার সরকারের সিদ্ধান্ত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য অত্যন্ত অমানবিক ও অসম্মানজনক আচরণ। যদি আমার বসতবাড়ি ও দোকান ঘর অধিগ্রহণ করা হয়। তাহলে আমার বেঁচে থাকার আর কোনো উপায় থাকবে না। চিঠিতে রশীদ আরও বলেছেন, ইতোমধ্যে তার পরিবার সরকারের একাধিক প্রকল্পে অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, শহীদ বাগ মসজিদ, বাংলাদেশ রেলওয়ের সম্প্রসারণ রোড, শাজাহানপুর কবরস্থান, সিটি করপোরেশন প্রমুখ। এদিকে তার বাড়ি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মানবিক সহানুভূতি কামনা করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক নেতৃবৃন্দ।