নগর সংবাদ।।সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি না দিলে দলটির আন্দোলনের হুমকির বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘তারা যদি জানমাল বিনষ্টের চেষ্টা করেন, তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি দোয়া মাহফিল করতে পারে, মানববন্ধন করতে পারে। তারা রাজনৈতিক দল, কর্মসূচি দিতে পারে। মানুষের জানমাল ও সম্পদ রক্ষার জন্য আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব সময় প্রস্তুত থাকবে।’
রোববার (২১ নভেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এর আগে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার জন্য অনুমতি দিতে আবেদন করে পাঁচটি দল। কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিমের নেতৃত্বে পাঁচ দলের শীর্ষ নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন করেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘তারা যদি ওই জায়গায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন বা জানমাল বিনষ্টের চেষ্টা করেন, তাহলে কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। আমি আবারও বলছি, তারা বৈধভাবে যে কোনো ডেমোনেস্ট্রেশন করতে পারেন, সেখানে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো কিছু বলার নেই।’
পাঁচটি দলের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, তাদের আবেদনটি ছিল যে, খালেদা জিয়া অসুস্থ, তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন, তিনি একদম জীবনের শেষপ্রান্তে রয়েছেন। কাজেই তাকে আরও উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া যায় কি না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের একটি আবেদন এখানে নিয়ে এসেছেন।
তিনি বলেন, আমি তাদের বলেছি যে, এর আগেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই একটা আবেদন করেছিলেন। সেটাও আমি আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের জন্য পাঠিয়েছিলাম। আইনমন্ত্রী যথাযথভাবে পার্লামেন্টের প্রশ্নোত্তরের সময় বিস্তারিত বলেছেন। আমি এটা বলার পর তারা বলেছেন এটা মানবিক কারণে দেওয়া যায় কি না, সেই একটা বিবেচনা করার জন্য পত্র আমার কাছে দিয়েছেন। এটা আমি যথাযথভাবে যেখানে প্রয়োজন সেখানে পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেবো।
আইনমন্ত্রী বেগম জিয়ার চিকিৎসায় বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনার কথা বলেছেন, এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের হাসপাতালগুলো ওয়েল ইক্যুইপ্ট। বিদেশ থেকে যে কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এখানে আসতে পারেন। বিদেশি ডাক্তার এলে সেই চিকিৎসা এখানে করা যায়, সেই চিকিৎসা এখানেও করতে পারেন। কিছুক্ষণ আগে ইউনাইটেড হাসপাতালের একজন চিকিৎসক আমার এখানে এসেছিলেন- তিনিও আমাকে একই কথা বলেছেন।
পাঁচ দলের আবেদন আজই পাঠানো হবে কি না, এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এই চিঠি প্রক্রিয়াধীন থাকবে। প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পাঠানো হবে। উনি বলেছেন, এটা উদাহরণ কিংবা আইন কোনো কিছুই নয়। প্রধানমন্ত্রী যেমন করে ছুটে গিয়েছিলেন কোকোর ইন্তেকালের পর।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমি তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিন্তু অনেকগুলো উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। কোকো যখন ইন্তেকাল করলেন, তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দৌড়ে ছুটে গিয়েছিলেন তাকে সমবেদনা জানাতে। সেদিন কিন্তু খালেদা জিয়ার বাসভবনের গেটটিও খোলা হয়নি। এগুলোর সবই তারা জানেন। তারপরও তারা বলেছেন যে, একটা উদাহরণ সৃষ্টি করার জন্য যেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানাই। অতীতে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে। তার সঙ্গে যেসব ঘটনাগুলো ঘটেছে, সেগুলো ভুলে গিয়ে যেন কাজটা করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘কোকো, ২১ আগস্ট সবকিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে আরেকটা মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপনের কথা উনারা বলেছেন। আইন অনুযায়ী কোনো স্কোপ নেই। প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করলে ইয়ে.. করতে পারেন। এটা উনারা বলে গেছেন।’