সিলেট নগরে টেলিফোনের তারে ঝুলানো লাবিবা রহমান তানহা (১৩) নাম এক কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ করা হয়েছে।
রোববার (৬ এপ্রিল) নগরের শেখঘাট সরকারি কলোনি সংলগ্ন একটি বাসার গলিতে টেলিফোনের তারে গলায় প্যাঁচানো অবস্থায় ওই কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, শনিবার রাতে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিয়ে লাবিবাকে শাসন করেন তার মা। এ কারণে সে অভিমান করে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। রাতে ঘরে না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করে তার পরিবার। পরে ভোরে বাসার পাশের গলির এক কোনে গলায় টেলিফোনের তার ঝুলানো অবস্থায় তার নিথর দেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এসএমপির কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক বলেন, কিশোরীটির বাবা ২০১৯ সালে মারা যান। তার বড় বোন দেশের বাইরে থাকে। বাসায় আরেক বোন ও মাসহ থাকতো। সে একটি মাদরাসায় সপ্তম শ্রেণিতে পড়তো। এ অবস্থায় তার মধ্যে আচরণগত কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারেন তার মা। ৩ বোনের মধ্যে সবার ছোট লাবিবা মোবাইল ফোন অতিরিক্ত ব্যবহার করার কারণে শনিবার রাতে তাকে গালমন্দ করেন তার মা। মায়ের সঙ্গে অভিমান করে সে বাথরুমে প্রবেশ করে। মা ক্ষোভে তাকে বাথরুমে আটকে রেখে বাইরে থেকে লক করে রাখেন। পরে তার বড় বোন বাথরুমের দরজা খোলে দিতেই বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, রাত ২টা থেকে ৩টার মধ্যে সে আত্মহত্যা করেছে। কেননা, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, সে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়নি।
নিহত কিশোরীর মায়ের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, লাবিবা অনেক সময় এভাবে রাগ করে বেরিয়ে বান্ধবীর বাসায় চলে যেতো। খোঁজ নিতে গেলে তাকে বলা হতো সে আসেনি, যাতে টেনশনে রাখতে পারে। এ কারণে তাকে খোঁজ করতে যাননি মা। সকালে তার মরদেহ বাসার গলির টেলিফোনের তারে ঝুলতে দেখেন প্রতিবেশিরা। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতের পর ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে অন্যকোনো ঘটনা রয়েছে কি না, আমরা বিশ্লেষণ করেছি। নিহতের ফুফাতো ভাই-বোন দু’জন চিকিৎসক। তারাও উপস্থিত থাকায় ঘটনাটি আত্মহত্যা নিশ্চিত হতে আরো সহজ হয়েছে। ময়নাতদন্তে শেষে লাবিবার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।