প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৫, ২০২৪, ১১:৫৫ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুন ১৯, ২০২৪, ১:২১ পূর্বাহ্ণ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলা সৌদি আরবের দীর্ঘ ৫০ বছরের পেট্রোডলার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলা সৌদি আরবের দীর্ঘ ৫০ বছরের পেট্রোডলার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছ
- মাহবুব আলমঃ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলা সৌদি আরবের দীর্ঘ ৫০ বছরের পেট্রোডলার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। ওয়াশিংটন নতুন করে এ চুক্তি নবায়ন করতে চাইলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছে রিয়াদ। এ চুক্তির অবসানের ফলে সৌদি আরব এখন নিজেই অপরিশোধিত তেল বিক্রি করতে পারবে। অর্থাৎ মার্কিন ডলারের বদলে চীনা আরএমবি, ইউরো, ইয়েন, এবং ইউয়ানসহ বিভিন্ন মুদ্রায় তেল বিক্রি করবে পারবে সৌদি আরব। পেট্রোডলার কোনো মুদ্রার নাম নয়। অপরিশোধিত তেল রপ্তানি মার্কিন ডলারে হয় বলে এর এই নামকরণ হয়েছে। ১৯৭৪ সালের ৮ জুন আমেরিকা এবং সৌদি আরবের মধ্যে পেট্রোডলার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। গত ৯ জুন তার মেয়াদ শেষ হয়েছে। সেই চুক্তি নতুন করে চালু করতে আগ্রহী নয় সৌদি।পে পেট্রোডলার চুক্তি নতুন করে চালু না হওয়ায় বিশ্ব বাণিজ্য এবং অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়তে চলেছে বলে মত অনেকের। বিশ্বে মার্কিন ডলারের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও এ চুক্তির ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সত্তরের দশকের শুরুর দিকে বিশ্ব অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা ধাক্কা খেয়েছিল। ডলারের দাম আচমকা পড়তে শুরু করেছিল। সেই সময় পেট্রোলিয়ামের সংকটও দেখা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে। ১৯৭৩ সালে মূলত মিশর এবং সিরিয়ার নেতৃত্বে আরব দেশগুলি ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। ইসরাইলের পাশে দাঁড়িয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। ইসরাইলের পক্ষ নেওয়ায় খনিজ তেলের বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে পশ্চিম এশিয়ার তেল উৎপাদনকারী দেশগুলি। তাতে তাদের খনিজ তেলের ভান্ডারে আরও টান পড়ে। এ সংকট থেকে মুক্তি পেতে সৌদি আরবের সঙ্গে পেট্রোডলার চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল ওয়াশিংটন। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, সৌদির কাছ থেকে তেল কিনবে যুক্তরাষ্ট্র। পরিবর্তে সৌদিকে তারা সামরিক সহায়তা দেবে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সৌদি সামরিক সহায়তা পাওয়ায় ইসরাইলের হাতে তাদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। চুক্তির শর্ত ছিল, সৌদি শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নয়, অন্য যে দেশেই খনিজ তেল বিক্রি করবে, অর্থের লেনদেন হবে ডলারে। চুক্তিতে আরও বলা হয়েছিল, পেট্রোডলার থেকে যে রাজস্ব আদায় হচ্ছে, তা যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠাতে হবে সৌদিকে। এর মাধ্যমে এক দিকে যেমন সৌদি সামরিক সুরক্ষা পেয়েছিল, তেমনই আমেরিকায় পেয়েছিল অর্থনৈতিক নিরাপত্তা।
Copyright © 2024 নগর সংবাদ. All rights reserved.