মাসদাইর পাকাপুল এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী দিদারের জমজমাট মাদক ব্যবসা
নিজস্ব প্রতিবেদক: আমার নারায়ণগঞ্জ: নারায়নগঞ্জের প্রায় প্রতিটি এলাকায় আশঙ্কাজনকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে মাদক। শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামেও বিকিকিনি হচ্ছে। অনেক সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠালেও কিছুদিন পর আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে আবার মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সবসময় চুনোপুঁটিরা আইনের আওতায় এলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে মাদক কারবারি রাঘববোয়ালরা। নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা থানার মাসদাইর পাকাপুল এলাকায় প্রকাশ্যে চলছে মাদক সম্রাট দিদার মাতব্বরের জমজমাট মাদক ব্যবসা। মৃত আলাউদ্দিন মাতব্বরের পুত্র দিদার মাতব্বর মাসদাইর পাকাপুল এলাকায় বাড়ি করে মাদক ব্যবসা করে আসছে। মাদক ব্যবসায়ী দিদার মাতব্বরের জমজমাট মাদক ব্যবসার কারণে বিসিক,গুদারাঘাট,মাসদাইর পাকাপুল ও বেকারী মোড় এলাকায় হাত বাড়ালেই মিলছে মদ, গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন, ইয়াবা।
সন্ধ্যার পর থেকে মাসদাইরে রাস্তাঘাটে পাড়া মহল্লায় দিদার মাতব্বরের মাদক ঘুরে ঘুরে ফেরি করে বিক্রি করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা এমনটাই অভিযোগ করেন অনেকে। গত ১৬ই মে রোজ (মঙ্গলবার) রাত এগারোটা ত্রিশ মিনিটে তাদের কে ফতুল্লা মডেল থানার মাসদাইর বেকারী মোড় চুন্নু কনফেকশনারি দোকানের সামনের পাকা রাস্তা থেকে ২৪০ পিছ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মাদক ব্যবসায়ী দিদার মাতব্বর ও তার অন্য তিন সহযোগী মোঃসাবু,মোঃতানজিল,মোঃসাখাওয়াত হোসেন উৎসবকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এছাড়াও গত ২৫শে মার্চ শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মাসদাইর বেকারী মোড়ের একটি পাঁচ তলা ভবনের পঞ্চম তলায় অভিযান চালিয়ে ৮ শত পিছ ইয়াবা ট্যাবলেট সহ পমাদক ব্যবসায়ী দিদার ও তার অন্য তিন সহযোগী শাখাওয়াত,মোশারফ ও বাপ্পিকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়,২০১৮ সালের ৩১ আগষ্ট মাসদাইর পাকাপুল এলাকার সুরুজ্জামালের বাড়ির সামনে পাওনা টাকা চাওয়ায় মাদক সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হয়েছে সুমন (৩২) নামে অপর এক মাদক ব্যবসায়ী। তাকে মাদক ব্যবসায়ীরা পিটিয়ে গুরুতর আহতাবস্থায় কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুর্মুর্ষ অবস্থায় সুমনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে তিনি মারা যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ,মাসদাইর এলাকার মাদক ব্যবসায়ী দিদার মাতব্বর একই বছরে দুইবার ডিবির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরও জামিনে বের হয়ে ফের মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।এলাকার কিছু প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চক্রটি নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে মাদক বিক্রি করে থাকেন। মাদক সহজলভ্য হওয়ায় এলাকার উঠতি বয়সি তরুণদের সঙ্গে কিছু সংখ্যক তরুণীও নেশার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। ইদানিং মাদকাসক্ত পরিস্থিতিটা ফতুল্লার মাসদাইর এলাকায় ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন আমার নারায়ণগঞ্জকে জানান, এলাকায় হেরোইন, গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিলে সয়লাব হলেও এগুলো দেখার কেউ নেই। যারা বন্ধ বা প্রতিরোধ করবে তারাই এ ব্যবসায়ীদের সাথে জড়িত হয়ে নিরব ভূমিকা পালন। এ মরণনেশা মাদকে দিন দিন এলাকার তরুণরা আসক্ত হচ্ছে। তারা জানান, মাদক সেবনকারীদের উৎপাতে এলাকায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মারামারিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। পুলিশ ও র্যাব অভিযান চালিয়ে ইদানিং কয়েকজন মাদক বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করলেও বন্ধ হয়নি মাদক ব্যবসা। বরং দিন দিন এলাকায় মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবনকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিনিয়ত যুবক ও তরুণরা যোগ দিচ্ছে মাদক সেবনের সাথে ব্যবসায়ও। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম মিয়া বলেন, মাদক ব্যবসায় জড়িতদের আটকের পরেও নিয়ন্ত্রণে আনা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। মাদক ব্যবসায়ীরা নতুন নতুন কৌশলে মাদক বহন করছেন। আমরাও চেষ্টা করছি মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনার। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।