মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার আধারা ইউনিয়নে কাঠমিস্ত্রি নুর ইসলাম হাওলাদার হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, মেঘনা নদীতে মাছ ধরার সময় ডাকাতের হামলায় নুর ইসলাম নিহত হয়েছেন বলে ছেলেরা দাবি করলেও মা তাছলিমা বেগমকে পেটানোর প্রতিশোধ নিতে তিন ছেলে মিলে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেন। তারপর ঘটনা ধামাচাপা দিতে সাজানো হয় ‘ডাকাত হামলার’ নাটক।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মাহফুজুর রহমান আল মামুন
পুলিশ জানায়, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নুর ইসলামের পরিবারে কলহ চলছিল। রোববার (৯ এপ্রিল) সকালে দাম্পত্য কলহের জের ধরে নুর ইসলাম তার স্ত্রী তাছলিমা বেগমকে মারধর করেন। আহত অবস্থায় তাছলিমা শহরের উপকণ্ঠ মুক্তারপুর এলাকায় তার মেয়ের বাড়িতে চলে যান। নুর ইসলাম নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরে ওইদিন বিকেলে বোন হামিদা বেগমের বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন নুরুল ইসলাম।
এদিকে, মাকে মারধর করায় ক্ষুব্ধ ছিলেন ছেলে সুমন হাওলাদার (৩০), মোহাম্মদ আলী হাওলাদার (২৩) ও রাসেল হাওলাদার (২০)। সোমবার ভোরের দিকে মোহাম্মদ আলী ও রাসেল হাওলাদার ডেকে আনেন ভাই সুমনকে। এরপর ঘুমন্ত অবস্থায় নুর ইসলামকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেন তিন ভাইসহ অজ্ঞাতপরিচয় ২-৩ জন। নুর ইসলাম বাঁচার আকুতি করলে হত্যা নিশ্চিত করতে এক ভাই রামদা দিয়ে কোপাতে থাকেন আর অপর দুই ভাই ধরে রাখেন। পরে সকালে ডাকাত হামলার নাটক সাজান তারা।
পুলিশ সুপার আরও জানান, ডাকাতদের হামলায় নিহত হওয়ার প্রচার চালালেও ভিন্ন তথ্য আসে পুলিশের কাছে। সোমবার দুপুরে নিহতের দুই ছেলে সুমন হাওলাদার ও মোহাম্মদ আলীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত তথ্য উঠে আসে। অপর ছেলে রাসেল হাওলাদার পলাতক।
এ ঘটনায় নিহতের বোন হামিদা খাতুন একটি মামলা করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেফতারদের মুন্সিগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।