প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ১১:৫৭ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ ডিসেম্বর ১, ২০২৩, ১:০৭ পূর্বাহ্ণ
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের পরলোক গমন
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের পরলোক গমন
হাকিকুল ইসলাম খেকন, সিনিয়র প্রতিনিধিঃ
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার পরলোক গমন করেছেন ।খবর বাপসনিউজ ।সাবেক এই শীর্ষ কূটনীতিক একজন নোবেলজয়ী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। স্থানীয় সময় বুধবার ,২৯ নভেম্বর ২০২৩,১০০ বছর বয়সে মারা যান তিনি।স্থানীয় সময় বুধবার তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কানেক্টিকাটে তার নিজ বাড়িতে পরলোক গমন করেন। কিসিঞ্জার ছিলেন হার্ভার্ডের একজন অধ্যাপক যিনি পরবর্তীতে রাজনীতিতে নাম লেখান। মার্কিন-সোভিয়েত শীতল যুদ্ধের অন্যতম কারিগর মনে করা হয় তাকে। ১৯২৩ সালে জার্মানিতে তার জন্ম হলেও ১৯৩৮ সালে তার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে আসে। জার্মানিতে জন্ম নেয়া এ কূটনীতিক ছিলেন ইহুদী ধর্মের অনুসারী।১৯৪৩ সালে তিনি মার্কিন নাগরিকত্ব পান এবং তিন বছরের জন্য দেশটির সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।ব্যাচেলর, মাস্টার্স এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি হার্ভার্ডের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন। ১৯৬৯ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন তাকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন। এর মাধ্যমে তিনি মার্কিন রাজনীতিতে বিপুল ক্ষমতা লাভ করেন।পরে তিনি নিক্সনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান। পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডের আমলেও তিনি একই পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে ইসরায়েল এবং প্রতিবেশীদের ইয়ম কিপুর যুদ্ধ এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধ নিয়ে প্যারিস শান্তিচুক্তি করে ব্যাপক আলোচনায় আসেন।তিনি ছিলেন ৫৬তম মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন এবং জেরাল্ড ফোর্ড এর আমলে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন ৮ম মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক। রাজনীতি করতেন রিপাবলিকান দলে।নিক্সন, চৌ এন লাই ও মাও সে তুংয়ের মধ্যে ১৯৭২ সালের ঐতিহাসিক সম্মেলনের ধারাকে আরও এগিয়ে নিতে হেনরি কিসিঞ্জার চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অচল কূটনীতিক সম্পর্ককে পুনরায় চালু করেন। স্নায়ূযুদ্ধের সেই ঐতিহাসিক বিরোধিতাকে নির্মূল করে চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন ও রাশিয়ার সঙ্গে আঁতাত করে ফেলেন। সেই একই সময়ে কিসিঞ্জার চিলিতে সামরিক অভ্যুত্থানে ইন্ধনদাতার ভূমিকা রাখেন।একই সঙ্গে আরব দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ইসরায়েলে বিপুল পরিমাণে সামরিক অস্ত্র ও গোলা সরবরাহ করে। ওই অঞ্চলে শক্তির ভারসাম্য রক্ষায় এমন ব্যবস্থা নিয়েছিলেন তিনি। এর পর কোন আরব দেশ ইসরায়েলে সরাসরি হামলা চালানো থেকে বিরত থাকে। চলতি বছর ২৭ মে এক’শ বছর পূর্ণ করেন বর্ষীয়ান এই কূটনীতিক। জার্মান বংশোদ্ভুত মার্কিন এ নাগরিক বিভিন্ন সময় সেনা সদস্য, গোয়েন্দা কর্মকর্তা, হার্ভাড ছাত্র ও কূটনীতিক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। চিলির সামরিক অভ্যুত্থান, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও পূর্ব তিমুর ও কম্বোডিয়ার বোমা হামলায় হেনরি কিসিঞ্জারের বিতর্কিত সম্পৃক্ততা এখনও বিশ্বরাজনীতিতে তাকে নিন্দিত ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করে। একাধারে নিন্দিত ও নন্দিত হওয়া এমন একজন বর্ণাঢ্য কূটনীতিকের পক্ষেই সম্ভব। এটা স্পষ্টই বলা যায় তার সময়কালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নব্য সাম্রাজ্যবাদ ও বলয়কে অনেক বেশি বিস্তৃত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
Copyright © 2024 নগর সংবাদ. All rights reserved.