নগর সংবাদ।। বরিশালে যৌন হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে সুমি আক্তার (১৬) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে নিজ বাড়িতে ওই ছাত্রীর মৃত্যু হলে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে থানা পুলিশ।
সুমির মা শিউলী বেগম জানান, সুমিকে পার্শ্ববর্তী ঠাকুরমল্লিক গ্রামের বাসিন্দা ও বখাটে রাকিব ফকির (৩০) দীর্ঘদিন থেকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। ওই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় রাকিব তার মেয়েকে বিভিন্নভাবে হয়রানি ও উত্ত্যক্ত করে আসছিল।
বিষয়টি সুমি তার মা শিউলি বেগমকে জানালে তিনি বিষয়টি রাকিবের পরিবারের সদস্যদের অবহিত করেন এবং এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। এতে রাকিব আরও ক্ষিপ্ত হয়ে স্কুল ছাত্রীকে যৌন হয়রানি শুরু করে।
শিউলী বেগম বলেন, ২১ জানুয়ারি রাকিবের বাড়িতে গিয়ে শেষবারের মতো সতর্ক করে এসেছিলাম। আর সেই সঙ্গে পরবর্তীতে আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথাও জানিয়ে আসি।
কিন্তু রাকিব এতেও না ফিরে মোবাইল ফোনসহ বিভিন্নভাবে সুমিকে ধর্ষণ করাসহ বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেয়। এতে অভিমান করে ওইদিন বিকেলে পরিবারের সবার অজান্তে ঘরে বসেই সুমি শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
তিনি বলেন, বাড়ির লোকজন টের পেয়ে সুমিকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে সুমির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তবে আর্থিক সংকটে বেশিদিন চিকিৎসা চালাতে না পারায় মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসি। বাড়িতেই সুমি মারা যায়।
বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে এবং যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।