বিএনপির শাসনামলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যে নির্যাতন করা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার তার প্রতিশোধ নিতে যায়নি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি সরকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর যে অত্যাচার করেছে, আওয়ামী লীগ সরকার তার কিছুই করে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির মাত্র ২৯টি সিট পায়, পরে উপনির্বাচনে একটি। এখন তারা আন্দোলন করবে, সরকার উৎখাত করবে অনেক কিছু বলে যাচ্ছে, আয়োজনও করেছে। ১০ ডিসেম্বর নিয়ে বিএনপি খুব হম্বিতম্বি করেছে, আমরা দেখেছি, মিছিল মিটিং করেছে, আমরা বাধা দেইনি। কিন্তু বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, আওয়ামী লীগ তো তখন একটা মিছিল মিটিংও করতে পারতো না। সব জায়গায় বাধা, যেভাবে অত্যাচার করেছে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর, মেয়েদের রাস্তায পিটিযে গায়ের কাপড়-চোপড় ছিঁড়ে ফেলেছে। এমনভাবে, একদিকে ছাত্রদল একদিকে পুলিশ বাহিনী মিলে। সে কথা আমরা ভুলি কী করে?
‘আমরা কিন্তু প্রতিশোধ নিতে যাইনি’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ওরা আমাদের ওপর যা করেছে, আমরা তার কিছুই করি না। তারপরেও দেখি দেশে বিদেশে গিয়ে হাহাকার করে বেড়ায়, কেঁদে বেড়ায়। মনে হচ্ছে বাইরে থেকে কেউ এসে একবারে দোলায় করে ক্ষমতায় তাদের বসিয়ে দেবে, সেই স্বপ্নে তারা বিভোর। হয় তো এক সময় তারা সেটা করতে পেরেছে দালালি করে। কিন্তু এখন আর সেই দালালি করে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ নাই, পারবে না। বাংলাদেশের মানুষ এখন অনেক সচেতন, বাংলাদেশের মানুষ নিজের দেশ সম্পর্কে এখন অনেক জানে। ইতিহাস সম্পর্কে জানে এবং আমাদের লক্ষ্য কী, সেটাও তারা জানে। ২০০৮-এর পর আমরা পর পর ক্ষমতায় এসেছি, আমরা তো জনগণের জন্য কাজ করেছি, এটা তো কেউ আর অস্বীকার করতে পাবে না, আজকে বাংলাদেশের চেহারা পালটে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, এর মধ্যে অনেক বাধা। বিএনপি আর জামায়াত মিলে অগ্নি-সন্ত্রাস, এটা মানুষ কীভাবে ভুলবে। মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা, এভাবে কোনো জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারে, এ দৃষ্টান্ত বিএনপিই দেখাতে পারে এবং বিএনপি দেখিয়েছে সেটা। তারা যে আগুন নিয়ে খেলেছিল, বাংলাদেশের মানুষ যদি তাদের বেলায় এই আগুনের খেলাটা খেলে তখন তাদের কী অবস্থাটা হবে, সেটা কি একবারও ভেবে দেখে বিএনপি। অগ্নি-সন্ত্রাসী যারা, এদের সম্পর্কে দেশের মানুষকে সজাগ থাকতে হবে। আমি যত সহযোগী সংগঠন সব সংগঠনের নেতাকর্মীকে বলবো ওদের অপকর্মের কথা দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। ওরা লুটপাট করতে আসে, দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে। তাদের পাচারের টাকা তো আমরা উদ্ধারও করেছি। খালেদা জিয়া, তারেক, কোকো যে টাকা পাচার করেছে, ৪০ কোটি টাকা কিন্তু আমরা ইতোমধ্যে বিদেশ থেকে উদ্ধার করে ফিরিয়ে এনেছি। আরও অনেক টাকা তাদের অনেকেরই আছে, সেগুলো বিভিন্ন দেশে ফ্রিজ করা আছে, আমরা আনার প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। যারা নিজের দেশের অর্থ অন্যকে তুলে দেয়, নিজের দেশের স্বার্থকে বিকিয়ে দেয় আর নিজের দেশের মানুষকে পুড়িয়ে মারে; তারা আবার ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে কীভাবে?