নগর সংবাদ।।রংপুরের পীরগঞ্জে স্ত্রী রিনা কে ছয় শতাংশ জমি লিখে দেয়ায় ছেলেদের ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে-স্কুলশিক্ষক ও স্ত্রী।
রংপুরের পীরগঞ্জে স্ত্রীর নামে ছয় শতাংশ জমি লিখে দেয়ায় ক্ষিপ্ত ছেলেদের ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে স্ত্রীসহ অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন এক বৃদ্ধ। এমনই ঘটনা ঘটেছে উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের কাদিরাবাদ গ্রামে। এ ঘটনায় বৃদ্ধ শফিউল আলম (৬৫) বাদী হয়ে শনিবার (৭ আগস্ট) পীরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মদনখালী ইউনিয়নের কাদিরাবাদ গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক শফিউল আলমের প্রথম স্ত্রী মারা যায়। তার মৃত্যুর পর ছয় বছর আগে ছেলেমেয়েদের সম্মতিতে উপজেলার অনন্তরামপুর গ্রামের মৃত আজিজুর রহমান মণ্ডলের বিধবা মেয়ে রিনা বেগমকে (৩৮) দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ের পর স্ত্রী রিনা বেগম সন্তানসম্ভবা হওয়ায় সৎছেলে সরওয়ার আলম শামীম (৪৫) ও রবিউল আলম স্বপন মিয়া (৪২) তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন। এক পর্যায়ে তাদের নির্যাতন সইতে না পেরে বাধ্য হয়ে রিনা বেগম গর্ভের চার মাসের সন্তান নষ্ট করেন।
স্ত্রী রিনা বেগমের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে স্বামী শফিউল আলম বসতবাড়ির জন্য সম্প্রতি ছয় শতাংশ জমি তার নামে লিখে দেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছেলে সরওয়ার আলম শামীম ও রবিউল আলম স্বপন মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে রিনা বেগম ও সফিউল আলমকে গত ৬ আগস্ট নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখেন। ওই জমি লিখে দেয়ায় ছেলেরা তাদের দিনভর দফায় দফায় শারীরিক নির্যাতনসহ প্রাণনাশের চেষ্টা চালান। এক পর্যায়ে রিনা বেগম ও সফিউল আলম প্রাণভয়ে ওই রাতেই কৌশলে সবার অজান্তে ঘরের পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী খালাশপীরে এক আত্মীয়ের বাড়ি আশ্রয় নেন। খবর পেয়ে ক্ষিপ্ত ছেলেরা সেখানেও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আশ্রয়দাতাসহ বৃদ্ধ বাবা-মাকে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকেন।
এ ঘটনার পরদিন শনিবার সন্ধ্যায় বাবা শফিউল আলম বাদী হয়ে দুই ছেলে, দুই ছেলের স্ত্রীসহ সাতজনকে অভিযুক্ত করে পীরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
রোববার (৮ আগস্ট) বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৃদ্ধ বাবা-মা নিরাপত্তাহীনতার কারণে ওই আত্মীয়ের বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন বলে জানা যায়।
অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে পীরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জামিউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।