রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। শুক্রবার (৩ মার্চ) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভদ্রা রোডের পাশে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।
ছুরিকাহত ওই শিক্ষার্থীর নাম আব্দুল্লাহ আল জাহেদ। তিনি বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়েছিল। পরে সেখান থেকে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগীর সহপাঠী সূত্রে জানা যায়, রাত ৮টার দিকে জাহেদ চারুকলা অনুষদের দিকে রাতের খাবার খেতে যান জাহেদ। খাওয়ার পর চারুকলা থেকে ভদ্রা যাওয়ার রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটছিলেন তিনি। এসময় বেশ কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার পথরোধ করে টাকা চায়। এসময় তার কাছে থাকা ২০০ টাকা তাদের দিয়ে দেন। তারপর সে যেতে শুরু করলে দুর্বৃত্তরা সামনে গিয়ে জাহেদের কাছে আরও টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। এতে দুর্বৃত্তরা তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। চারুকলার পাশে থাকা পুলিশ ফাঁড়িতে সাহায্য চাইলে তেমন সহযোগিতা পাননি জাহেদ। তাকে চার জায়গায় ছুরিকাঘাত করা হয়। প্রথমে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়া হলেও পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ভর্তি করা হয়।
এদিকে ঘটনার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবনের মূল ফটক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকেন। এসময় তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা ঘটছে। প্রশাসন শুধু আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যান্তরে পুলিশ মোতায়েন কেন করা হয়েছে এ নিয়ে তাদের প্রশ্ন? তারা তাদের দায়িত্ব বাদ দিয়ে সারাদিন লুডু খেলায় ব্যস্ত থাকেন। জাহেদের মতো আর কত শিক্ষার্থীর রক্ত ঝরলে প্রশাসন ঠান্ডা হবে। দোষীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসন ভবন ত্যাগ করবেন না বলে প্রশাসনকে জানিয়ে দেন।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রবিউল আওয়াল বলেন, আজকে আমার ভাইকে মেরেছে কাল আমার স্যারকে মারবে, পরশু আমার বোনকে মারবে আর প্রশাসন শুধু তদন্ত কমিটি গঠন করে আশ্বাস দিয়ে যাবে। ক্যাম্পাসের পুলিশেরা এখন লুডু পুলিশ হয়ে গেছে। আমাদের একটাই দাবি ওখানে কর্তব্যরত থাকা পুলিশদের জবাবদিহি করতে হবে। এভাবে আর কত শিক্ষার্থীর রক্ত ঝরলে প্রশাসনের টনক নড়বে। নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি এ শিক্ষার্থীর।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক বলেন, আমরা ওই শিক্ষার্থীকে চিকিৎসার জন্য রামেকে পাঠাই এবং ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করায়। আর পুলিশ বাহিনীর সাথে কথা বলছি। ক্যাম্পাসের মতো একটা জায়গায় এমন ঘটনা কীভাবে ঘঠছে। সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চন্দ্রিমা থানার পুলিশ পরিদর্শক এস এম মাসুদ পারভেজ বলেন, আমরা ঘটনা ঘটার পর থেকেই সতর্ক রয়েছি এবং দোষীদেরকে আটক করতে আমাদের টিম এরই মধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। আমরা আমাদের অভিযান অব্যাহত রাখবো।