বর্তমানে (বুধবার, ১৯ অক্টোবর দিনগত রাত ১২টা) রাবির শিক্ষার্থীরা রামেক হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে অবস্থান নিয়েছেন।
মাঝখানে অবস্থান নিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্ট চালাচ্ছে। তবে কোনো পক্ষই শান্ত না হওয়ায় রামেক হাসপতালে বর্তমানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর চিকিৎসকের অবহেলার অভিযোগ তুলে রাবির শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে ভাঙচুর চালান। এরপর বিক্ষোভ শুরু করেন। এদিকে হাসপাতালের ভেতর ভাঙচুর ও চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল স্টাফদের ওপর হামলার অভিযোগে দায়িত্বরত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবি, তাদের চিকিৎসকদের ওপর হামলা করেছেন রাবি শিক্ষার্থীরা।
তারা দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছেন। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে হামলা ভাঙচুরে প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেন তারা। এ পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে। বর্তমানে হাসপাতালের ভেতরে ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং বাইরে রাবির শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন।
খবর পেয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধদের শান্ত করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিক্ষুব্ধরা সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন।
এদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগিডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানীও শিক্ষার্থী এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কোনো পক্ষই তা মানতে রাজি হয়নি। ফলে সেখানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ।
নিহত শিক্ষার্থীর নাম শাহরিয়ার (২৬)। হবিবুর রহমান হলের ৩৫৪ নং কক্ষের আবাসিক ছাত্র শাহরিয়ার মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক তারেক নূর জানান, কীভাবে শাহরিয়ার ছাদ থেকে পড়েছেন, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন,বুধবার রাত ৮টার দিকে শাহরিয়ার ছাদ থেকে পড়ে গেলে সহপাঠীরা তাকে প্রথমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেয়। সেখান থেকে তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করার পর ৮ নম্বর ওয়ার্ডে নেওয়া হয়। পরে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে ছাত্রের মৃত্যুর কথা ঘোষণার পর রামেক হাসপাতালে ভাঙচুর শুরু করেন বিক্ষুব্ধ রাবি শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা হাসপাতালের ৮ নং ওয়ার্ডের দুই চিকিৎসককে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এছাড়া টেবিল চেয়ারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন।
এসময় রামেক হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। শিক্ষার্থীরা ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দুই চিকিৎসককে অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রাজনৈতিক নেতারা সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।