আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে ইসতেগফার করার দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। ইসতেগফারের বিনিময়ে প্রাপ্তি কী, তা-ও বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন। তন্মধ্যে রিজিক বাড়ার বিষয়টিও সুস্পষ্টভাবে ওঠে এসেছে। রিজিক বাড়াতে আল্লাহ তাআলার এ নির্দেশ কী?
আল্লাহ তাআলা সুরা নুহ-এ তার অনুগত বান্দাদের এ মর্মে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন যে, তোমরা ইসতেগফার কর। ইসতেগফারে কী কী নেয়ামত পাওয়া যাবে, তা-ও তুলে ধরেছেন এ সুরায়। আল্লাহ তাআলা বলেন-
فَقُلۡتُ اسۡتَغۡفِرُوۡا رَبَّکُمۡ ؕ اِنَّهٗ کَانَ غَفَّارًا - یُّرۡسِلِ السَّمَآءَ عَلَیۡکُمۡ مِّدۡرَارًا - وَّ یُمۡدِدۡکُمۡ بِاَمۡوَالٍ وَّ بَنِیۡنَ وَ یَجۡعَلۡ لَّکُمۡ جَنّٰتٍ وَّ یَجۡعَلۡ لَّکُمۡ اَنۡهٰرًا
‘এরপর বলেছি, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ইসতেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত করবেন এবং তিনি তোমাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দ্বারা সমৃদ্ধ করবেন এবং তোমাদের জন্য উদ্যান স্থাপন করবেন এবং প্রবাহিত করবেন নদীনালা।’ (সুরা নুহ : আয়াত ১০-১২)
কোরআনের দিক নির্দেশনা হলো- ইসতেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করা। পরের ইসতেগফারের ফজিলত ও বরকত তুলে ধরা হয়েছে। তাতে মিলবে আল্লাহর ক্ষমা, রিজিক, সন্তান-সন্তুতি ও রক্ষা পাবে পরিবেশের বাসযোগ্য ভারসাম্য। যারা নিয়মিত বেশি বেশি ইসতেগফার করবেন, আল্লাহ তাআলঅ তাদের জন্য রিজিকের দরজা উন্মুক্ত করে দেবেন।
হাদিসের বর্ণনা থেকে সুস্পষ্ট, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও দিনে ৭০/১০০ বার ইসতেগফার করতেন। সুতরাং কোরআনে ঘোষিত নেয়ামত পেতে কয়েকটি ছোট ছোট ইসতেগফার তুলে ধরা হলো-
১. শুধু (اَسْتَغْفِرُ اللهِ) `আসতাগফিরুল্লাহ’ বেশি বেশি পড়া।
২. رَبِّغْفِرْ وَارْحَمْ وَ اَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِيْنَ- রাব্বিগফির, ওয়ারহাম ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।
৩. ﺃَﺳْﺘَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺍﻟْﻌَﻈﻴﻢَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﻫُﻮَ ﺍﻟْﺤَﻲُّ ﺍﻟﻘَﻴّﻮُﻡُ ﻭَﺃَﺗُﻮﺏُ ﺇِﻟَﻴﻪِ -
উচ্চারণ : আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম ওয়া আতুবু ইলাইহি।
অর্থ : 'আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ছাড়া ইবাদতের উপযুক্ত কোনো উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী। আমি তাঁর কাছেই তওবা করছি।
রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যেই ব্যক্তি এই দোয়া পড়বে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেবেন, যদিও সে জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করার মতো অপরাধী হয়।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ, মিশকাত)
অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহর শপথ! নিশ্চয় আমি প্রতিদিন ৭০ বার-এর অধিক আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই এবং তাওবা করি-
৪. اَسْتَغْفِرُ الله وَ اَتُوْبُ اِلَيْهِ – ‘আসতাগফিরুল্লাহ ওয়া আতুবু ইলাইহি’
বিশেষ করে ক্ষমা, রিজিকের সন্ধান ও বরকত পেতে এ দোয়াটি বেশি বেশি পড়া-
رَبِّ اغْفِرْلِىْ ذُنُوْبِىْ وَافْتَحْ لِىْ أَبْوَابَ فَضْلِكَ
উচ্চারণ : ‘রাব্বিগফিরলি জুনুবি, ওয়াফতাহলি আবওয়াবা ফাদলিকা’
অর্থ : ‘হে আমার রব! আমার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দাও; আর আমার জন্য তোমার অনুগ্রহের দরজা খুলে দাও।’ (তিরমিজি)
মুমিন মুসলমানের উচিত, আল্লাহর কাছে বেশি বেশি ইসতেগফার করা। রিজিকে বরকতসহ কোরআন-সুন্নায় ঘোষিত ফজিলত ও মর্যাদাগুলো পাওয়ার চেষ্টা করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রিজিকে বরকত পাওয়ার কোরআনি আমল বেশি বেশি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।