রূপগঞ্জের ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- রূপগঞ্জের দরিগুতিয়াবো এলাকার মনির হোসেনের ছেলে মো. আশিক মিয়া (১৯) ও একই উপজেলার মালখান গ্রামের মৃত আক্তারুজ্জামানের ছেলে মো. রমজান মিয়া (৩৫)।
মাদকের টাকা সংগ্রহের জন্য চালকের গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই করে আশিক মিয়া। এ সময় র্যাব ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও উদ্ধার করে।
সোমবার (১১ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টায় র্যাব ১১-এর সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন কোম্পানী অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর পাশা । এর আগে গত ১০ অক্টোবর গাজীপুরের কালীগঞ্জ ও রূপগঞ্জের ব্রাক্ষণখালী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লে. কর্নেল তানভীর পাশা জানান, গত ৮ অক্টোবর রূপগঞ্জ থানাধীন পূর্বাচল নতুন শহরের ৭নং সেক্টরের ২১৯ নং রোড়ে ১৪২/এ বাড়ির উত্তর পাশে ফাঁকা রাস্তায় অজ্ঞাত ব্যক্তির গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। এমন সংবাদে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মো. দুখাই মিয়া নামক এক ব্যক্তি শনাক্ত করেন লাশটি তার ছেলে হৃদয় মিয়ার। পরে তিনি বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এরপর থেকে এ হত্যাকোন্ডের প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন ও হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে র্যাব ১১-এর গোয়েন্দা দল ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের গ্রেপ্তার করাসহ ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে। এছাড়াও গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য আত্মগোপন থাকা এই হত্যাকাণ্ডের প্ররোচনাকারী ও ইজিবাইক চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য সবুজকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছে র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, হত্যাকারী আশিক মাদক ব্যবসায়ী ও সংঘবদ্ধ ইজি বাইক চোর চক্রের সদস্য মো. সবুজ (৪৪) এর নিকট থেকে নিয়মিত মাদক ক্রয় ও সেবন করত। একপর্যায়ে মাদক সেবনসহ অন্যান্য কাজে আশিকের অর্থের প্রয়োজন হলে সে সবুজের কাছে টাকা ধার চায়।
তখন সবুজ ইজিবাইকচালককে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনতাই করার বুদ্ধি দেয় এবং বলে যে পেছন থেকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে অথবা গলায় ছুরি চালিয়ে হত্যা করলে চালক কোনোভাবেই প্রতিহত করতে পারবে না।
ছিনতাইয়ে পর ইজি বাইক বিক্রির জন্য গ্রেপ্তারকৃত অপর আসামী রমজানের সঙ্গে আশিককে পরিচয় করিয়ে দেয়।
এরপর গত ৭ অক্টোবর ইজিবাইক ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে রূপগঞ্জের ডাঙ্গাবাজার থেকে ২০ টাকা দিয়ে একটি ছুরি ক্রয় করে আশিক। পরে একই বাজার থেকে বিকাল ৪টায় হৃদয় মিয়ার ইজিবাইক ভাড়া করে। এবং ৭ টার দিকে ইজিবাইক নিয়ে পূর্বাচল এলাকায় যায়। সেখানে পেছন থেকে ইজিবাইক চালকের গলায় গামছা পেঁচিয়ে ধরে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে।
এ সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে আশিক তার সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে হৃদয় মিয়াকে গলা কেটে হত্যা করে।
হত্যার পর আশিক নিজেই ওই ইজিবাইক চালিয়ে গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানার পাগুরা এলাকায় গিয়ে সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য রমজানের কাছে ইজিবাইকটি রেখে আসে।