রূপগঞ্জে মনিরা আক্তার বৃষ্টি’র মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনের দাবিতে পরিবারের আদালতে মামলা
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ রূপগঞ্জ থানাধীন কাঞ্চন চরপাড়া এলাকার আরমান এর পুত্র অর্থ লোভী রুবেল (৩৫) তার স্ত্রী মনিরা আক্তার বৃষ্টি (২২) কে যৌতুকের টাকার জন্য পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে নতুবা মানসিক ভাবে নির্যাতন করে স্ত্রীকে আত্নহত্যা করতে বাধ্য করে। এ মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে সুকৌশলে রুবেল ও তার পরিবার মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সবাইকে ম্যানেজ করে অপমৃত্যুর ঘটনা সাজিয়ে তড়িৎ ভাবে লাশ দাফন করে সেই সাথে লাস ময়না তদন্তে স্বাক্ষরের কথা বলে রূপগঞ্জ থানার অপমৃত্যুর মামলার অভিযোগে স্বাক্ষর নিয়েছে বলে এমনটাই দাবি মৃত মনিরা আক্তার বৃষ্টি’র পরিবারের। মৃত্যুর কিছুদিন পেরিয়ে গেলে নিহতের পরিবারের মৃত্যুর ঘটনা রহস্যজনক মনে হওয়াতে হত্যার প্রকৃত কারন উদঘাটন করতে ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে ন্যায় বিচারের দাবীতে মোকামঃ বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী ৩ নং আদালত, নারায়ণগঞ্জে মামলা দায়ের করেন । যাহার মামলা নং ৪১৫/২০২৩। আদালত মামলা আমলে নিয়ে পোষ্ট মর্টেম রিপোর্ট ও সুরতহালের উপর ভিত্তি করে মামলাটি আদেশের জন্য ৫ ডিসেম্বর ২০২৩ পরবর্তী ধায্য তারিখ রাখেন। ঘটনার বিবরনে রূপগঞ্জ থানাধীন মাহনা(বড়বাড়ী) এলাকার নিহত বৃষ্টি’র মা সালমা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমরা হতদরিদ্র। ২ছেলে ২ মেয়ে নিয়ে আমাদের সংসার। ৪ সন্তানের মধ্যে মৃত্যু হওয়া মনিরা আক্তার বৃষ্টি (২২) সবার বড়। ২০১৯ সালে পারিবারিক ভাবে রুবেল এর সহিত বৃষ্টি’র বিয়ে দেই। বিয়ের সময় অনেক কষ্টে ১ ভরি স্বর্ণ ও ঘর সাজানোর জন্য আসবাবপত্র দেই। যার আনুমানিক মূল্য ছিলো প্রায় ২ লক্ষ টাকা। বিয়ের সংসারে ১ বছর পর একটি পুত্র সন্তান হয় তার নাম ইফরা।বর্তমানে বছর (১ বছর ৮ মাস)। বিয়ের একবছর পর প্রথম মেয়ে জামাই রুবেল আমার মেয়ে বৃষ্টিকে চাপ দেয় প্রথমে হোন্ডা কিনবে বলে ৭০ হাজার টাকা দিতে। আমাদের কাছে নগদ টাকা না থাকায় সমিতির কিস্তি তুলে তখন ৭০ হাজার টাকা দেই। এর পর যখন তখন টাকা দাবি করে আমাদের কাছে মেয়েকে পাঠাতে থাকে। নিরুপায় হয়ে মেয়ের সুখের চিন্তা করে নিশ্চুপ থেকে এ পযন্ত আমরা সর্বমোট দুই লক্ষ টাকার উর্ধে দিয়েছি। মৃত্যুর আগে মেয়ে বাড়িতে এসে আমার কাছে টাকা চাইলে আমি অপারগতা স্বীকার করি এবং ধৈর্য্য সহকারে সংসার করতে বলি। কিন্তুু ১৩ অক্টোবর সকাল ১০ টায় জামাই ফোন করে বৃষ্টিকে তার দাবীকৃত টাকা নিয়ে বাড়ী আসতে বলে। টাকা ছাড়া যেনো বাড়িতে ফেরত না আসে। আমরা টাকার ব্যবস্হা না করতে পারায় বৃষ্টি খালিহাতে স্বামীর বাড়ি চলে যায় এবং সেই দিনই দুপুর ১টায় আমাদের ফোন করে বলে আমার স্বামী টাকার জন্য অত্যাচার করছে যদি তোমরা টাকা না নিয়ে আস তাহলে আমাকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিচ্ছে। এরপর বিকেলে আমাদের কাছে রুবেলের বাসা হতে ফোন আসে বৃষ্টি আর বেঁচে নেই। এ সংবাদ পাইয়া আমরা বৃষ্টি’র শশুর বাড়ি যাই এবং গিয়ে দেখি বৃষ্টি’র অর্ধেক শরীর খাটের উপর ও বাকী অংশ খাটের নিচে পড়ে রহিয়াছে। তাহার হাত মুষ্টিবদ্ধ এবং জিহবা মুখের বাহিরে রহিয়াছে। এ দৃশ্য দেখিয়া আমরা হতভম্ব হইয়া পড়ি এবং কি ভাবে মারা গেলো কারন জানতে চাইলে তারা বলেন বৃষ্টি আত্মহত্যা করেছে। এ কথা শুনে আমরা আর কিছুই ভাবতে পারিনি আমাদের মানসিক শক্তি হারিয়ে ফেলি। সে সময় এলাকার অনেক লোকজনের সাথে পুলিশের উপস্থিতি ছিলো। আমরা কিছু বুজে উঠার আগেই আমার স্বামী মনির এর নিকট থেকে পুলিশের কাগজে স্বাক্ষর চায় এবং বলে মেয়ের লাস হাসপাতালে পাঠাতে হবে ময়নাতদন্তের জন্য। ময়না তদন্তের পর হাসপাতাল থেকে নিহতের মরদেহ নিয়ে এসে রুবেল আমাদের এলাকায় মরদেহ দাফন করে দেয়। আমাদের হিতাহিত জ্ঞান ফিরে আসলে বৃষ্টি’র মৃত্যু রহস্য জনক মনে হলে রূপগঞ্জ থানায় যাই। তখন জানতে পারি অপমৃত্যুর একটি মামলা হয়। যাহার মামলা নং ৬৮/২৩, তারিখ -১৩-১০-২০২৩ইং। কিন্তু আমাদের সন্দেহ রুবেল ও রুবেলের পরিবার টাকার জন্য আমার মেয়েকে হত্যা করেছে নয়তো আত্নহত্যা করতে বাধ্য করেছে। আমরা বৃষ্টি’র হত্যার প্রকৃত রহস্য জানতে চাই। তাই আদালতে মামলার করি। আমরা চাই আদালতের নির্দেশনায় গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে মৃত্যুর রহস্য অনুসন্ধানের মাধ্যমে বের হয়ে আসুক এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে আদালত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবেন। ন্যায় বিচারের স্বার্থে আদালতে মামলা করেছি।