রূপগঞ্জে বাড়ি ভাড়া ও দোকান বাকী না দিতে পারায় মারধর করে খালি হাতে ভাড়াটিয়াকে বের করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে বাড়িওয়ালা খালেক মজুমদারের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৫জুলাই উপজেলার তারাবো পৌরসভার দিঘীবরাব এলাকায়। এ বিষয়ে রাতেই ওই ভুক্তভোগী রূপগঞ্জ থানায় গিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
পরে সেই অভিযোগের ভিত্তিতে রূপগঞ্জ থানার এসআই রাসেল বাড়িওয়ালাকে আটক করলেও মিমাংসার কথা বলে ছাড়িয়ে আনেন স্বজনরা। পরবর্তীতে মিমাংসা না করে উল্টো অভিযোগ তুলে নিতে গত ২৫জুলাই ওই অসহায় ভাড়াটিয়ার উপর আবারও নির্যাতন করে বাড়িওয়ালা।
ভুক্তভোগী রূপগঞ্জ থানার এসআই রাসেলকে জানালে তিনি আবার অভিযোগ করার কথা বললে ভুক্তভোগী অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পর পর দুটি অভিযোগ দায়ের করার পরও কোন বিচার পাচ্ছেন না বলে জানায় ভুক্তভোগী অসহায় ভাড়াটিয়া গৃহবধূ লিপাস (৩৩)।
অসহায় ভাড়াটিয়া গৃহবধূ লিপাস আরো জানান, তার বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার মাটিয়াপুর এলাকায়। প্রায় ১০ বছর যাবৎ তিনি স্বামী ও দুই ছেলে-এক মেয়েকে নিয়ে রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার দিঘীবরাব এলাকায় বসবাস করছেন।
ওই এলাকার খালেক মজুমদারের বাড়িতে প্রায় ১ বছর ধরে পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকছেন এবং গোডাউনের জন্য ওই বাড়ির আরেকটি ঘর ভাড়া নিয়ে ১০জন লোক খাটিয়ে তার স্বামী প্লাস্টিকের হরেক মালের ব্যবসা করছেন।
সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনে ব্যবসা বন্ধ থাকায় তাদের এক মাসের বাসা ভাড়া আটকে যায়। এছাড়া গত ১ মাস আগে ভারি বর্ষণে তাদের বসতঘর পানিতে তলিয়ে যায়। সন্তানদের নিয়ে পানিতে বসবাস করা কষ্টকর হওয়ায় তার স্বামী আজিজুর রহমান অন্যত্র ভাড়া বাসা খুঁজতে যান।
এ খবর বাড়িওয়ালা খালেক মজুমদার জানতে পেরে গত ১৫জুলাই রাত ৯টার দিকে আজিজুর রহমানের অনুপস্থিতিতে তার ঘরে হামলা চালিয়ে ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে এবং বাড়ি ভাড়া ও দোকান বাকীর টাকা দিতে চাপ প্রয়োগ করেন খালেক মজুমদারসহ তার দুই পত্র মুনছুর (৩৭) ও রবিউল (২৭) আরো অজ্ঞাত ৪/৫জন।
এই তাণ্ডব দেখে ঐ অসহায় ওই গৃহবধূর ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে ভয় পাওয়ায় তাদেরকে বাঁধা দিতে এগিয়ে গেলে তাকে মুনছুর ও রবিউল চর-থাপ্পরসহ কিল-ঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। এমনকি গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ও একটি স্মাট মোবাইল ফোন লুটে নেয়।
হামলার খবরটি শুনে তার স্বামী আজিজুর রহমান দ্রুত ছুটে আসলে তারা তাকেও মারধর করে ব্যবসার মালামালসহ ঘরের আসবাবপত্র রেখে পরিবারসহ বাড়ি থেকে বের করে দেয় এবং বেশি বাড়াবাড়ি করলে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে ১৫ জুলাই অভিযোগ দায়ের করলে স্বজনরা মিমাংসার কথা বলে ছাড়িয়ে আনেন। পরবর্তীতে মিমাংসা না করে উল্টো অভিযোগ তুলে নিতে ২৫জুলাই আবারও নির্যাতন করেন বাড়িওয়ালা। পুলিশকে এ বিষয়টি জানালে তারা অভিযোগ করতে বলেন।
এখন অভিযোগ করেও কোন বিচার পাচ্ছেন না বলে জানান ওই ভুক্তভোগী লিপাস। এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।