২১শে জুলাই মঙ্গলবার, ঠিক দুপুর একটায়, এস ইউ সি আই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির আহবানে, লেলিন স্মরণ দিবসে, অভয়ার ন্যায় বিচারের প্রতিবাদে এবং জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে, হেদুয়া পার্ক থেকে ধর্মতলা রানী রাসমণি রোড পর্যন্ত এক মহা মিছিল করলেন, মহা মিছিল শুরুর আগে হেদুয়ায় নেতৃবৃন্দরা বক্তব্য রাখেন।
এই মহা মিছিলের উদ্দেশ্য হলো, অভয়ার ন্যায়বিচার, মূল্যবৃদ্ধি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দুর্নীতি , বিদ্যুতের মাশুল বৃদ্ধি, কেন্দ্র রাজ্য সরকারের শ্রমিক কৃষক বিরোধী নীতি, জাতীয় শিক্ষানীতি কুড়ি বাতিল সহ অন্যান্য দাবী নিয়ে আজকের এই মহামিছিল। বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার মানুষ জমায়েতন এবং প্রতিবাদ জানান, বিক্ষোভ দেখান, মিছিলে পায়ে পা মেলান।
এই বিশাল মিছিলের ফলে ধর্মতলা চৌধুরী যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়, কারণ মিছিল যখন হেদুয়া থেকে রানী রাসমনির রোডে পৌঁছে যায় তখনও মিছিল সিনেমা কাছে । এতটাই বিশাল আকার ধারণ করেছিল আজকের মহা মিছিল। মিছিলে অংশ নেন আইনজীবীরাও। মিছিলের প্রথম ভাগে ছিলেন রাজ্য সম্পাদক মন্ডলী সদস্য তরুণ কান্তি নস্কর সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা। মিছিলের মধ্যভাগে দেখা যায় আইনজীবীদের সাথে বাগুইহাটি অঞ্চলের বাসিন্দা 81 বছরের বৃদ্ধা মাকে প্রতিবাদ জানাতে, তাহার মেয়ের ন্যায়বিচার চাইতে, তিনি জানান আমি কোনদিন মিছিলে পা বাড়াইনি, কিন্তু আজ আমি মিছিলে এসেছি,
শুধু আমার মেয়ের ন্যায় বিচার চাইতে, ৮১ বছরের বৃদ্ধা মাকে সকলের সাথে প্রায় তিন কিলোমিটারের উপর রাস্তা পায়ে হাঁটা হেঁটে আসতে দেখা যায়, শুধু তাই নয় তিনি স্লোগান দিয়ে বলেন, আমার মেয়ের বিচার চাই, ন্যায্য বিচার চাই, জিনিসের দাম কমাতে হবে। মিছিল শুরু হয় হেদুয়া পার্ক থেকে দুপুর দুটোয়। সকলের মুখে একটায় স্লোগান, অভয়ার ভয় নাই, ন্যায্য বিচার চাই, প্রকৃত দোষীদের সাজা চাই,
তাহার সাথে সাথে গোলা মেলান সমস্ত আইনজীবীরা, তাহারা বলেন যেভাবে সরকার একের পর এক অন্যায় করে, সমস্ত কিছু ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন, যেভাবে জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি বেড়ে চলেছে, সাধারণ মানুষ বিপদের সম্মুখীন, শুধু তাই নয়, শিক্ষা খাতে পর্যন্ত দুর্নীতি ভরে গিয়েছে।, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও দুর্নীতি, জাল স্যালাইন থেকে শুরু করে আল ওষুধ সাধারণ মানুষকে প্রয়োগ করে মারা হচ্ছে, অথচ দোষীদের শাস্তি হচ্ছে না তাদেরকে আড়াল করা হচ্ছে। আর প্রমাণ আর জি কর কাণ্ড, প্রকৃত দোষীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে, আর সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে আজীবন কারাদণ্ড দিয়ে প্রকৃত দোষীদের আড়াল করার চলছে ,আমরা তা হতে দেব না। যতদিন না প্রকৃত দোষীরা সাজা পাবে এ আন্দোলন চলবে।
এবং আমরা স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদত্যাগ দাবি করছি, বিষাক্ত স্যালাইনে যেভাবে একটি প্রাণ কেড়ে নিল। তারা রাজ্যে সমস্ত ডিপার্টমেন্টে দুর্নীতি বেড়ে চলেছে একদিকে হু হু করে জিনিসের দাম বাড়ছে, অন্যদীকে কেন্দ্র সরকার কলকারখানা কে প্রাইভেটের হাতে তুলে দেয়ার চেষ্টা করছে, শ্রমিকেরা বেকার হয়ে পড়ছে, রাজ্য সরকার উপযুক্ত শিক্ষকদের চাকরি বিক্রি করে, প্রকৃত শিক্ষকদের পথে বসাচ্ছে, তারা দিনের পর দিন আন্দোলন করে চলেছে , এমনকি বিদ্যুতের চার্জ বৃদ্ধি, প্রিপেইড স্মার্ট মিটার চালু করে সাধারণ মানুষকে বিপদে মুখে ঠেলে দেবার চেষ্টা করছেন আমরা তা হতে দেব না।
অবিলম্বে এই সকল বন্ধ করতে হবে। আপনারা যতই আতত তৈরি করুন না কেন, আমরা এর শেষ দেখে ছাড়বো, অভয় আর সঠিক বিচার আদায় করে নেব, আজ অভয়ার মা বাবা এখনো খুশি হতে পারেননি ,প্রকৃত দোষীদের শাস্তি না দেওয়ায়,তাহারা আশা করেছিলেন সরকারের কাছে, তার মেয়ের প্রকৃত দোষীদের সঠিক শাস্তি হবে। মেয়ের আত্মার শান্তি পাবে, কিন্তু তাহা হয়নি, তাই আমরা অভয়ার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাই। দোষীদের বিচার ও শাস্তি চাই। তাই আজ সবাই মিছিলে পা মিলিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।