সোমবার (২২ মে) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা ঘুসের টাকা ফেরত চাওয়ায় সমাজসেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের হাতে দুই নারী লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ সূত্রে জনা যায়, উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের বাসিন্দা নাজমা বেগম ও জান্নাত বেগম। তারা দুজনই গৃহিণী। নাজমা বেগম তার ছেলেকে বিদেশ পাঠাবেন। এজন্য টাকা প্রয়োজন। জান্নাত বেগমেরও টাকার প্রয়োজন স্বামীর মাছ ধরার জাল কিনবেন বলে। পাঁচ মাস আগে তারা ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিতে এসেছিলেন ভেদরগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে। নিয়ম মেনে ঋণের আবেদন করলেও তাদের কাছ থেকে অফেরতযোগ্য ১০ হাজার টাকা ঘুস নেন সমাজসেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। তবে আবেদনের পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও তারা ঋণ পাননি।
সোমবার তারা উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে এসে ঋণ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তবে সমাজসেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান তাদের ঋণ দেননি। পরে ওই দুই নারী ঘুসের ১০ হাজার টাকা ফেরত চান। টাকা ফেরত চাওয়ায় ওই কর্মকর্তা প্রথমে নাজমাকে থাপ্পড় মারেন। এতে জান্নাত বেগম বাধা দিলে তাকেও ধাক্কা মারতে মারতে অফিসের বাইরে নিচে ফেলে দেন। পরে ওই দুই নারী দৌড়ে ইউএনও কার্যালয়ে আশ্রয় নেন এবং বিচার চেয়ে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
ভুক্তভোগী নাজমা বেগম বলেন, ‘ছেলেকে বিদেশে পাঠাবো বলে কিছু টাকা দরকার ছিল। এজন্য ঋণের আবেদন করেছিলাম। ঋণ দিতে সমাজসেবা কর্মকর্তা আমার কাছে পাঁচ হাজার ঘুস নেন। পরে ঋণ না দেওয়ায় ওই টাকা ফেরত চাই। তবে টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো আমাকে দুইটা চর মারেন। পরে আমি পড়ে যাই।’
ভুক্তভোগী জান্নাত বেগম বলেন, ‘স্বামীর মাছ ধরার জাল কিনবো বলে ঋণ চেয়েছিলাম। ঋণ দেবেন বলে সমাজসেবা অফিসার পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছেন। এখন ঋণ দিচ্ছেন না। আমরা যে টাকা দিয়েছি তা ফেরত চাইলে আমাদের ওপর চড়াও হন। প্রথমে নাজমাকে থাপ্পড় মারতে থাকেন। পরে আমি বাধা দিলে আমাকেও ধাক্কা দেন। দৌড়ে বাইরে বের হলে ওই অফিসার আমার বোরকা টেনে ধরেন।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের মোবাইলে একাধিবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ বৈদ্য বলেন, ‘ঘটনাটি আপনার কাছ থেকেই শুনলাম। বিষয়টি তদন্ত করা হবে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ ইউএনও আব্দুলাহ আল মামুন বলেন, ‘একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি উপজেলা সমবায় কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’