ধোলাই নদীর জলকর ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শাহজাদপুর উপজেলার বৃ-আঙ্গারু গ্রামের নিজাম গং আতাহার-আলীম গংয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এনিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলাও হয়েছে।
এদিকে মামলার হয়রানি থেকে বাঁচতে নিজাম গংকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করেন আতাহার ও তার লোকজন। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী আপন প্রতিবন্ধী বোন নারজু খাতুনকে (২৮) নির্মমভাবে গলা কেটে হত্যা করেন আতাহার ও তার লোকেরা।
সেই ঘটনার দেড় বছর পর বুধবার (২০ জুলাই) রাতে হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের কথা জানিয়েছে সিআইডি পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির উপ-পরিদর্শক (এসআই) তোফাজ্জল হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর খুন হন নারজু খাতুন। এ ঘটনায় নিহতের ভাইপো সবুজ বাদী হয়ে নিজাম গংয়ের ১৩ জনকে আসামি করে শাহজাদপুর থানায় মামলা করেন। মামলাটি থানা পুলিশের তদন্তের একপর্যায়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গ্রহণ করে সিআইডি।
পরে সিআইডি সিরাজগঞ্জ জেলার বিশেষ পুলিশ সুপার কামাল হোসেনের তদারকিতে তদন্ত শুরু করা হয়। তদন্তে দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব ও আওয়াল খুনের বিষয়টি গভীরভাবে সামনে চলে আসে। গত ১৫ জুলাই সরোয়ার হোসেন সনজু নামে এ মামলার সন্দেহভাজন এক আসামিকে আটক করা হয়। ১৬ জুলাই তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। তার জবানবন্দিতে এ হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসে।
সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মো. ওহেদুজ্জামান বলেন, জবানবন্দিতে সরোয়ার হোসেন সনজু উল্লেখ করেন, আওয়াল হত্যার পর তাদের মধ্যে কেউ পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন, আবার কেউ জেলহাজতেও ছিলেন। এ সুযোগে আওয়ালের স্বজনরা তাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর, গরু, ছাগল ও মালামাল লুট করে। সেই পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে নিজেদের কাউকে খুন করে প্রতিপক্ষের লোকজনের নামে মামলা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন তারা।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাতে সবাই মিলে আতাহারের নির্দেশে তার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বোন নারজু খাতুনকে গলাকেটে হত্যা করেন। পরে তার মরদেহ ফাঁকা জায়গায় ফেলে চলে যান। এরপর সবুজকে দিয়ে নিজাম গংয়ের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়।
সিআইডি পরিদর্শক ওহেদুজ্জামান আরও বলেন, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী নারজুর বড় ভাইসহ অন্যান্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।