শনিবার ২২শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রাত ১১:২১
শিরোনামঃ
Logo ডেভিল হান্টের আওতায় আওয়ামী লীগ ও জাপা নেতাসহ ৪২ জন গ্রেফতার Logo সরিষা ক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে ছোট ভাই নিহত, বড় ভাই আহত Logo রাজধানীতে ৪৪ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে গেছে Logo ভাড়া বাসা থেকে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার Logo ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ওড়না পেঁচিয়ে নারীর মৃত্যু Logo মাতৃভাষা যে কোনো নৃগোষ্ঠীর ইতিহাস, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির বাহক, মাতৃভাষার সঙ্গে সব মানুষের আত্মার সম্পর্ক-প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।। Logo কড়াইল বস্তিতে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ১০ ইউনিট। Logo একুশের প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা’য় বাংলাদেশ রিপোর্টার্স ক্লাব নারায়ণগঞ্জ Logo শুভমুক্তি পেলো বহু প্রতীক্ষিত OTT প্লাটফর্মে, ক্লিক সিরিজের FOLLOWERS. Logo মোহাম্মদপুরে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে দুজন নিহত ও পাঁচজন গ্রেফতার

শিশুশ্রম: আলোকিত জাতির অন্তরায়

nagarsangbad24
  • প্রকাশিত: অক্টোবর, ৩০, ২০২৪, ৯:১৭ অপরাহ্ণ
  • ১৩১ ০৯ বার দেখা হয়েছে

       
 
  

 

 

 

শিশুশ্রম: আলোকিত জাতির অন্তরায়

‘সবচেয়ে খেতে ভালো মানুষের রক্ত’ – কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের এই কথার বাস্তব চিত্র সমাজ, রাষ্ট্র তথা সমগ্র বিশ্বেই স্পষ্ট। ফুলকলিসম শিশুদের শৈশব নিংড়ে নিংড়ে বর্তমান পুঁজিবাদী সমাজ প্রাচুর্যের পাহাড় গড়েছে, অথচ শৈশব সময়টা হচ্ছে একজন মানুষের জীবন গঠনের প্রারম্ভ মুহূর্ত। সুকুমার বিকাশ, মেধা ও প্রতিভার খোঁজ মানুষ এ বয়সেই পেয়ে থাকে।অথচ আমাদের এই দেশে দিন দিন শিশুর মেধা বিকাশের সে পথটিকে করা হচ্ছে রুদ্ধ।

যদি আমরা পিছনে দিকে ফিরে যাই, শিশুদের শ্রমবৃত্তিতে নিয়োগ প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে।

বিভিন্ন দেশে আর্থসামাজিক অবস্থার ভিন্নতা, সাংস্কৃতিক ও মূল্যবোধের ভিন্নতা, প্রকৃতি ও পরিবেশের ভিন্নতার কারণে দেশে দেশে শিশুর বয়স নির্ধারনে কিছুটা পার্থক্য আছে । আবার একই দেশে কাজের ধরন ও কাজের পরিবেশের কারণে শিশুর বয়স নির্ধারণে পার্থক্য রয়েছে। যেমন জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ(১৯৮৯) অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে সব মানব সন্তানকে শিশু বলা হবে, যদি না শিশুর জন্য প্রযোজ্য আইনের আওতায় ১৮ বছরের আগেও শিশুকে সাবালক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আইএলও কনভেনশন ১৩৮ অনুযায়ী ১৫ বছরের নিচে মানব সন্তানকে শিশু বলা হবে কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ১৮ বছরের নিচের বয়সের মানব সন্তানকে শিশু বলা হবে। বাংলাাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী যাদের বয়স ১৪ বছর পূর্ণ হয়নি তাদেরকে শিশু বলা হয়।প্রচলিত আইনের মাধ্যমে নির্ধারিত বয়সের চেয়ে কম বয়সে কাজে নিয়োজিত সকল শ্রমিকই শিশু শ্রমিক। বিশেষজ্ঞদের ঐক্যমত্য অনুযায়ী প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক সকল ক্ষেত্রে শিশুর জন্য শারীরিক, মানসিক ও নৈতিক দিক থেকে ক্ষতিকর এবং শিশুর প্রয়োজন ও অধিকারের সঙ্গে সামজ্ঞস্যহীন বঞ্চনামূলক শ্রমই শিশু শ্রম ।

বর্তমানে যারা নিজেদের সভ্য বলে দাবি করে এবং পৃথিবীতে আর্দশের ঝান্ডা উড়ানোয় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়, তারাও শিশুদের শৈশব নিয়ে অর্থের লোভে ছিনিমিনি খেলে। সারাদিন চৌদ্দ থেকে ষোলো ঘণ্টা পরিশ্রম করে শিশুরা যে পারিশ্রমিক লাভ করে, তা দিয়ে সামান্য খাবারও জোটানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। উপরন্তু পরিশ্রমের সাথে যোগ হয় নানারূপ শারীরিক ও মানসিক লাঞ্ছনা। পত্রিকার পাতায় ঢুকলে দেখা যায় শিশুদের ওপর বিভিন্ন অমানবিক নির্যাতন, অপরাধসহ এমনি মৃত্যুের ঘটনা। ফলে শ্রমজীবি শিশুদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। পোশাক শিল্প, চামড়া শিল্প, নির্মাণ শিল্প, হোটেল, রেস্তোঁরা, যানবাহন ইত্যাদি খাতে দেখতে পাই কীভাবে শিশু শ্রম বিক্রি করে।বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা -যাওয়ার পথে দেখতাম ৮-১২ বছরের শিশুরা যানবাহনের হেল্পার, খবরের কাগজ, ফুল, আচার, ঝাল মুড়ি সহ ফুটপাত এমনি কি দারিদ্রের কষাঘাতে ভিক্ষাবৃত্তি করতো। আমার কষ্টগুলো চেপে রাখতাম।মূলত দরিদ্রতার পিষ্টতলে পিতামাতারা তাদের শিশুদেরকে শ্রমে নিয়োজিত করেন। আর এই সুযোগে পুঁজিপতি ধনিক শ্রেণি এদের শ্রমকে সামান্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে ক্রয় করে। তাদেরকে দিয়ে বিভিন্ন ক্রাইম করাতে দ্বিধাবোধ করে না। শেষ পর্যন্ত নেশার জগত থেকে শুরু করে ইভটিজিং, মাদক ইয়াবাসহ নানা রকম অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।

যখন শৈশবকালে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত শিশুরা কঠিন শ্রমে জড়িয়ে পড়ে তখন তাদের বুদ্ধির স্বাভাবিক বিকাশ হয় না। শিক্ষার আলো বিবর্জিত পরিবেশে এরা অশিক্ষিত, গোঁড়া ও দুশ্চরিত্র হিসাবে বেড়ে ওঠে। ফলে সমাজে সৃষ্টি হয় সন্ত্রাস, চুরি, ডাকাতি মতো নৃশংস ঘটনার এবং অশিক্ষিত এ সমস্ত মানুষ তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও শিক্ষার দিকে ধাবিত করে না। অকালে ঝরে পড়ে যায় অনেকগুলো সম্ভাবনা মেধাবী ফুলকুঁড়ি। তাই আমাদের সমাজ ও জাতিকে আলোকিত পথে পরিচালিত করতে হলে ও দেশের স্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করকে হলে শিশুশ্রম বন্ধ করতে হবে এবং পিতামাতাকে তাদের সন্তানের শিক্ষার ব্যাপারে যত্নবান হতে হবে। সরকারকেও এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। এ ক্ষেত্রে সমাজের দরিদ্র শ্রেণির জন্য অবৈতনিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করতে হবে এবং এ ব্যাপারে বিভিন্ন নীতিমালা বাস্তবায়নের মাধ্যমে পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি শিশুরা যেন শ্রমের সাথে জড়িয়ে না পড়ে এবং তাদেরকে প্রলোভন দেখিয়ে কেউ যেন কোনো অনৈতিক কাজে সম্পৃক্ত করতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ কিংবা আইন প্রণয়ন করতে হবে। কারণ আজকের শিশুরাই আগামী জাতির ভবিষ্যৎ। সুতরাং, ভবিষ্যতকে আলোকিত করতে চাইলে অভিভাবক, সমাজ ও সরকারকে সহানুভূতির হাত বাড়াতে হবে এবং শিশুশ্রম বন্ধের মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে শৈশবের আনন্দময় আলোকিত আঙিনা। তবেই তাদের উন্নয়নের পথ সুগম হবে।

–নেজাম উদ্দিন

শিক্ষার্থী,চারুকলা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

এ বিভাগের আরও খবর...

পুরাতন খবর

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭  

Archive Calendar

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭  
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | নগর সংবাদ
Design & Developed BY:
ThemesCell