বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশ চলছে এক দুর্বিনীত দুঃশাসনের সর্বনাশা প্রতাপে। বিরোধী দল ও মত এখন নিষ্ঠুর নিষ্পেশনে পিষ্ট। গ্রাম থেকে শহরে বিএনপির কোনো নেতাকর্মীরই স্বাভাবিক জীবনযাপনে নিরাপত্তা নেই। সর্বত্রই মনে হয় আওয়ামী পুলিশ বাহিনী বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধরার জন্য ওৎ পেতে আছে।
সোমবার (৩ জুলাই) এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, বর্তমানে দুঃশাসনের প্রকোপ চরম মাত্রায় উপনীত। এ আওয়ামী সরকারের আমলে সমাজে নারী, পুরুষ নির্বিশেষে স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার নিরাপত্তা চরমভাবে বিপন্ন। এক বেপরোয়া স্বৈরাচারের কবলে পড়ে দেশের মানুষ জান-মালের নিরাপত্তার শঙ্কার পাশাপাশি শুধু ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার অধিকারও ক্রমান্বয়ে হারাচ্ছে। ক্ষুধা ও অনাহার এখন জনগোষ্ঠীর বিপুলসংখ্যক মানুষের নিত্যসঙ্গী। বর্তমানে কাঁচা মরিচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামের বিস্ময়কর বৃদ্ধিতে মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষের পিঠ দেওয়ালে ঠেকেছে।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনদের প্রশ্রয়ে দেশব্যাপী সন্ত্রাসী আর বখাটেদের আধিপত্য কায়েম থাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। পদে পদে মানুষের জীবন হয়ে পড়েছে বিপদাপন্ন। অপঘাতে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষ জীবন হারাচ্ছে। সড়কে মৃত্যুহার প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে। শাসকগোষ্ঠীর মদদে এহেন অনাচার ও সহিংস তাণ্ডবের প্রতিবাদ করার জন্যই ঢাকা, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিএনপি নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার ও কারাগারে প্রেরণ করা হচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যশোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সদস্যসচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু ও অন্যতম সদস্য মিজানুর রহমান খানসহ যুবদল, ছাত্রদলের ২১ জন নেতাকর্মীকে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জামিনের জন্য আদালতে হাজির হলে তাদের জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো এবং ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের আহ্বায়ক শেখ খালিদ হাসান জ্যাকি ও কলাবাগান থানা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাজিব হোসেনকে সব মামলায় জামিনে থাকার পরও পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার সরকারের অব্যাহত অত্যাচার, জুলুম ও নিপীড়নে স্বৈরাচারী নীতিরই বহিঃপ্রকাশ। তবে মিথ্যা মামলা আর গ্রেফতারের কৌশল অবলম্বন করে আটক নেতাকর্মীকে নিষ্প্রাণ, নীরস ও নিস্তেজ করা যাবে না, বরং তারা অগণতান্ত্রিক শক্তিকে আরও বেশি প্রতিরোধ করতে উদ্দীপ্ত হবে।
তিনি বলেন, রাজপথে জনগণের বিপুল শ্রোত থামানো যাবে না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবেই। তিনি অবিলম্বে যশোর ও ঢাকায় উল্লিখিত গ্রেফতার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান।