লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সম্পত্তি নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করায় বৃদ্ধ বাবাকে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তার ছেলের বিরুদ্ধে। ছেলের হাতে বাবার নির্মম মারধরের একটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।এতনিন্দার ঝড় বইছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বামনী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর সাগরদী গ্রামে।
ভুক্তভোগী বাবা হাফেজ মো. সোলায়মান (৮৪)। অভিযুক্ত ছেলের নাম মনোয়ার হোসেন (৩৭)। তিনি সোলায়মানের দ্বিতীয় ছেলে।
আহত সোলেমান বাংলাদেশ বেতারের সাবেক হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাফেজ সোলায়মান বলেন, আমার ছেলে আমার সঙ্গে প্রতারণা করে স্বাক্ষর নিয়ে তার নামে জমি লিখে নেয়। ‘জমির খতিয়ান অন্য ব্যক্তির নামে, এটি সংশোধন করতে হবে’ এ কথা বলে সে আমার কাছ থেকে এবং আমার স্ত্রীর কাছ থেকে কৌশলে একটি হেবা দলিলে স্বাক্ষর নিয়েছে। পরে ওই জমিতে থাকা নারিকেল-সুপারি সে একা ভোগ করা শুরু করে। বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় জমিটি তার। আমরা নাকি তাকে লিখে দিয়েছি। পুরো বিষয়টি পরে আমি জানতে পেরে লক্ষ্মীপুরের আদালতে মামলা করি। এ নিয়ে সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আমি আদালতে যে মামলাটি করি, সেটি গত ২২ মার্চ বিকেলে রায়পুর থানা পুলিশ তদন্ত করার জন্য আসে। এ সময় আমি নামাজ পড়ে বাড়ি ফিরছিলাম। বাড়িতে আসার সঙ্গে সঙ্গে হঠাৎ আমার ছেলে মনোয়ার আমার ওপর আক্রমণ করে।
তখন আমার গলা ধরে উঁচু করে সে মাটিতে আছাড় দেয়। আমার পেটে এবং বুকে অনেক আঘাত করে। এসময় পাশের বাড়ি থেকে পুলিশ দৌঁড়ে এলেও ততক্ষণে মনোয়ার পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ আমাকে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।
সোলায়মানের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম বলেন, স্বামীর স্বাক্ষর জাল করে ছেলে মনোয়ার হোসেন এক একর ২৬ শতাংশ জমি হেবা কাবলা ভুয়া দলিল করেন। ২০১৮ সালে সেই খবর পেয়ে মনোয়ারের বাবা আদালতে মামলা করেন। ওই মামলা চলতি বছর জমির দলিল আদালতে ভুয়া মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এ নিয়ে আমার ছেলে মনোয়ার রেগে গিয়ে তার বাবাকে মারধর করে।
অভিযুক্ত ছেলে মনোয়ার হোসেন বলছেন, বাবা সম্পত্তি লিখে দেবে বলেও লিখে দেয়নি। এমনকি বাবা হয়েও ইতোপূর্বে আমার নামে মামলা করেছেন। ভবিষ্যতে যাতে মামলা মোকদ্দমা না করেন সেজন্য লাঠি দিয়ে ভয় দেখিয়েছি।