ঢাকা প্রতিনিধি।।
সাভারে নিখোঁজ মো. সাজ্জাদ ইসলাম সবুজ (২৬) নামে এক যুবকের কার্টন ভর্তি মরদেহের ৯ খণ্ড উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে রোকনুজ্জামান পলাশ (২৬) ও তার কথিত স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার তৃষাকে (২৬)। তাদের ভারতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
পিবিআই বলছে, ফেসবুকে ফেক আইডিতে নিহত সাজ্জাদ ইসলাম সবুজ ও গ্রেফতার সুমাইয়া আক্তার তৃষার মধ্যে অশ্লীল ও নগ্ন ছবি আদান-প্রদানকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
শনিবার (১২ এপ্রিল) ঢাকা জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ৩ এপ্রিল ভোরে মো. সাজ্জাদ ইসলাম সবুজ বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন। পরিবার বহু চেষ্টা করেও তাকে খুঁজে পায়নি এবং ৪ এপ্রিল সাভার মডেল থানায় নিখোঁজ জিডি করা হয়। একদিন পর কেরানীগঞ্জের শাক্তা ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত স্থান থেকে এবং মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে একটি স্কুলের পাশে থেকে দুটি কার্টনে মোড়ানো অজ্ঞাত ৯ খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর মরদেহের ছবি দেখে নিহতের মামা মহসিন মিয়া শনাক্ত করেন লাশটি সবুজের।
পিবিআইয়ের ঢাকা জেলা তদন্তকারী দল তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সবুজের পরিচয় নিশ্চিত করে এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দুই আসামি রোকনুজ্জামান পলাশ ও সুমাইয়া আক্তার তৃষাকে শনাক্ত করে। হত্যাকাণ্ডের পর পলাশ তার খালুর বাড়িতে আত্মগোপন করেন এবং সুমাইয়া ফেনীতে পালিয়ে যান। তাদের ভারতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তবে পিবিআইয়ের নজরদারি ও তদন্তের মাধ্যমে তাদের পালানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়। সুমাইয়াকে ঢাকার গাবতলী থেকে অনুসরণ করে চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশসুপার মো. কুদরত-ই-খুদা আরও বলেন, নিহত যুবক সবুজ ও গ্রেফতার সুমাইয়ার মধ্যে ফেসবুকে ফেক আইডি ব্যবহার করে অশ্লীল এবং নগ্ন ছবি আদান-প্রদান শুরু হয়। একপর্যায়ে এই সম্পর্কের দ্বন্দ্বের ফলস্বরূপ হত্যার পরিকল্পনা গড়ে ওঠে এবং হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়।
গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পুলিশ হত্যাকাণ্ডের স্থান থেকে নিহত সবুজের ব্যবহৃত আইফোন, হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি, একটি কার্টন এবং মরদেহ বহনকারী গাড়ি উদ্ধার করেছে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এক ভ্যানচালক কামরুলও আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এ হত্যাকাণ্ড একটি ভয়াবহ সামাজিক দ্বন্দ্বের ফল হিসেবে চিহ্নিত করেছে, যা অনলাইনে সম্পর্কের সূত্রে খুনে রূপ নিয়েছে।