সাভারে ছেলেকে অপহরণ করে স্ত্রীর কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চেয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন মুসলিম পাটোয়ারী (৩৮) নামে এক ব্যক্তি। গ্রেপ্তার হয়েছেন তার এক সহযোগীও।
অপহৃত শিশু ইমামুলকেও (৮) উদ্ধার করেছে সাভার মডেল থানা পুলিশ।
গত মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ এলাকা থেকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে ২২ এপ্রিল ইমামুলকে ফুসলিয়ে কৌশলে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন তার মা পারুল বেগম।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস্) আব্দুল্লাহিল কাফি তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন- চাঁদপুর জেলার কঁচুয়া থানার পদুয়া পাটারী বাড়ি গ্রামের সুখ চাঁনের ছেলে মুসলিম পাটোয়ারী (৩৮) ও তার সহযোগী একই থানার সাহেদপুরের গণি মাস্টারের বাড়ির মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে মো. মোশারফ হোসেন (৫২)। তারা দুই জনই ইমামুলকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করেন।
পুলিশ জানায়, বেশ কয়েক বছর আগে পারুল বেগমের সঙ্গে মুসলিম পাটোয়ারীর বিয়ে হয়। এটি পারুলের দ্বিতীয় সংসার। ইমামুল তার প্রথম সংসারের ছেলে। ইমামুলকে নিয়ে মুসলিম পাটোয়ারীর সঙ্গে সাভারের ইমান্দিপুর এলাকায় বসবাস করছিলেন পারুল। হঠাৎ গত ২২ এপ্রিল ইমামুল নিখোঁজ হয়। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে না পেয়ে সাভার মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন পারুল। পরে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি পারুল বেগমের মোবাইলে ফোনে কল করে জানায়, ইমামুল তার হেফাজতে রয়েছে। ফেরত নিতে হলে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে চট্টগ্রাম হালিশহর যেতে হবে। তখন পারুলের দ্বিতীয় স্বামী মুসলিম পাটোয়ারী শিশুটিকে উদ্ধারের নাটক করেন এবং মোবাইল ফোনে স্ত্রীকে জানান, ইমামুলকে উদ্ধার করতে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া গেলে তাকেও আটকে রেখেছে অপহরণকারীরা।
খবর পেয়ে অভিযানে নামে সাভার মডেল থানা পুলিশের একটি টিম। পরে গত মঙ্গলবার দুপুর প্রায় ১২টার দিকে চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মুসলিম পাটোয়ারী ও মোশারফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর মুসলিম পাটোয়ারীর দেওয়া তথ্য মতে তার নিজ বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়া থানার পাটারী বাড়ি এলাকা থেকে ইমামুলকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পারুল বেগম লিখিত অভিযোগ দিলে তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। পরে আসামিদের দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস্) আব্দুল্লাহিল কাফি বলেন, ২২ এপ্রিল ইমামুলকে পারুলের দ্বিতীয় স্বামী মুসলিম পাটোয়ারী ও তার সহযোগী মোশাররফ অপহরণ করেন। প্রথমে তারা শিশুটিকে চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ থানাধীন অজ্ঞাতনামা একটি নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ে এবং পরে মুসলিম পাটোয়ারীর নিজ বাড়িতে হত্যা করার ভয় দেখিয়ে আটকে রাখেন। এরপর অন্য সিম ব্যবহার করে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে পারুল বেগমের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহিদুল ইসলাম, সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ জামানসহ কর্মকর্তারা।