নগর সংবাদ।।সেপ্টেম্বর থেকে আগামী জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে আসবে সাড়ে ১৬ কোটি ডোজ টিকা।করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আরও সাড়ে ১৬ কোটি ডোজ টিকা কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা সেপ্টেম্বর থেকে আগামী জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে চলে আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, আমাদের ৩ কোটি ৮৩ লাখ রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আগের তুলনায় করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। সংক্রমণের হার ১১ শতাংশে নেমে এসেছে। যেটা ৩২ শতাংশ হয়েছিল। আপনারা জানেন শিল্পকারখানাসহ অনেক কিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে, ভালো খবর এটাই সংক্রমণের হার কমে যাচ্ছে। হাসপাতালে প্রায় ৭৫ শতাংশ বেড এখন খালি আছে। সুতরাং রোগীর সংখ্যা অনেক কমেছে। মৃত্যুর হারও কমেছে। আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে কাজ করতে হবে। সবকিছু খুলে দেওয়ার অর্থ এ নয় যে, আমরা ঘুরে বেড়াবো। করোনা এখনও চলে যায়নি।
সরকার জনগণের পাশে আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, টিকার জন্য সরকারকে কত টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। এ কয়দিনে আমরা দেখলাম শুধু টিকার খরচ প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। সামনে আরো কিনতে হবে। আমরা যে অর্ডার দিয়েছি সেগুলো কিন্তু টাকা দিয়ে কিনতে হবে। সেখানে হাজার হাজার কোটি টাকা লাগবে। টিকা কেনার খরচ আছে, রাখার খরচ আছে, ম্যানপাওয়ার খরচ আছে। জনগণের পাশে এ সরকার আছে।
টিকা কার্যক্রমের বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা চীনে অর্ডার দিয়েছি সাড়ে ৭ কোটি টিকা। প্রথমে অর্ডার দেওয়া হয় দেড় কোটি। কিছুদিন আগেই আমরা ৬ কোটি টিকা অর্ডার দিয়েছি। আগামী তিন মাসে এ ৬ কোটি টিকা চলে আসবে, প্রত্যেক মাসে ২ কোটি করে। এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে একটা প্রস্তাব আমাদের কাছে এসেছিল, সাড়ে ১০ কোটি টিকার। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে উনার অনুমতি সাপেক্ষে এ টিকা কেনার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ সাড়ে ১৬ কোটি টিকা আমরা কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। টিকাগুলো সেপ্টেম্বর থেকে আগামী জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে চলে আসবে।
তিনি বলেন, ডব্লিউএইচও থেকে ৬ কোটি ৮০ লাখ টিকা আমরা বিনামূল্যে পাই, সেটা চলমান থাকবে। গতকাল আমরা ফাইজারের ১০ লাখ টিকা পেয়েছি। এটা এভাবে চলমান থাকবে। আমাদের পরিকল্পনা হলো সেপ্টেম্বর থেকে টিকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে দেড় থেকে ২ কোটি লোককে টিকা দেওয়া হবে।
বয়স্কদের অগ্রাধিকার দিয়ে টিকা দেওয়া হবে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বয়স্কদের সঙ্গে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। মডার্নার যে টিকা আমরা পাবো তার বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রীদের দেওয়ার চেষ্টা করবো। আমাদের ছেলে-মেয়েরা টিকা দিয়ে স্কুলে যেতে পারলে ভালো।
শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কেন মডার্নার টিকা দেওয়া হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ইউরোপ-আমেরিকাতে ফাইজার এবং মডার্নার টিকা বাচ্চাদের দেওয়া হয়েছে। তারা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বাচ্চাদের টিকা দিয়েছে। সে কারণে আমরাও এটা আমাদের দেশে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছি।
চুক্তি অনুযায়ী সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা পাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের ভারতে যে অর্ডার দেওয়া ছিল, তার ২ কোটি ৩০ লাখ টিকা এখনও পাইনি, অপেক্ষায় আছি। আমরা যোগাযোগে থাকি, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে যোগাযোগে থাকি, ওনারা আমাদের আশ্বস্ত করে আসছেন, আমরা টিকা পাবো। যদি কিনা আমরা এ টিকা না পাই, তাহলে অবশ্যই আমাদের টাকা-পয়সা নিয়ে আসতে হবে এবং ফেরত দিতে হবে। আমরা আশা করি টিকা পাবো।