স্বতন্ত্র প্রার্থী ডাকসুর সাবেক ভিপি আকতারুজ্জামান গাজীপুর-৫ আসনে বিপুল ভোটে বিজয়ী
মাহবুব আলমঃ গাজীপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বেশ পুরোনো রাজনীতিক। ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য, ডাকসুর ভিপি, জিএস। এবারের নির্বাচনে এই স্বতন্ত্র প্রার্থীকে শুরু থেকেই সমর্থন দিয়েছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। গাজীপুর-৫ আসনে নৌকার প্রার্থী মেহের আফরোজ চুমকিকে হারিয়ে বিপুল ভোটে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ডাকসুর সাবেক ভিপি আকতারুজ্জামান।
ট্রাক প্রতীকের আখতারউজ্জামান পেয়েছেন ৬২ হাজার ৯৪০ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক প্রতিমন্ত্রী বর্তমান সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি পেয়েছেন ৫০ হাজার ৬৯৬ ভোট। ভোটের ব্যবধান ১২ হাজার ২৪৪। এ আসনে প্রার্থী ছিলেন ৮ জন। বাকী ৬ প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
এই আসনে তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থী বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির উর্মি পেয়েছেন ৪৪৬ ভোট। গাজীপুরে বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনের মধ্যে চারটিতেই জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। নৌকার প্রার্থীদের মধ্যে হেরেছেন শুধু মেহের আফরোজ (চুমকি)।
গাজীপুর–৫ আসনের তিনবারের এই সংসদ সদস্যকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুজ্জামান। এদিকে “গাজীপুরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার মৃত্যু” বিষয়ে শোক প্রকাশ করেছেন সতন্ত্র থেকে বিজয়ী প্রার্থী “জনাব আখতারুজ্জামান”।
পরবর্তীতে রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে গাজীপুর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত ফলাফল ঘোষণা করেন “সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা”। তবে সরকারিভাবে সোমবার সকালে সব কটি আসনের ফলাফল ঘোষণা করবেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী : গাজীপুর–৫ (কালীগঞ্জ ও পুবাইল ও বাড়িয়া) আসনে ট্রাক প্রতীকে আখতারুজ্জামান ৮২ হাজার ৭২০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ৬৭ হাজার ৭৮৩ ভোট পেয়েছেন তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ। এদিকে গাজীপুর–১ (কালিয়াকৈর এবং গাজীপুর সিটির একাংশ) আসনের বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন আ ক ম মোজাম্মেল হক (নৌকা)। ১ লাখ ৯ হাজার ২১৮ ভোট পেয়েছেন তিনি।
তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম (রাসেল) ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৯২ হাজার ৭৮৮ ভোট। চতুর্থবারের মতো আসনটিতে জয় পেলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল। এই আসনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিমের হয়ে জোরালো প্রচারণায় নেমেছিলেন তিনি সাবেক জাহাঙ্গীর আলম। জেলাটিতে আসনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা ছিল গাজীপুর-২ (গাজীপুর সিটির একাংশ ও গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা) আসনে। শেষ পর্যন্ত ২২ হাজারের বেশি ভোটে বিজয়ী হয়েছেন নৌকার প্রার্থী যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান (রাসেল)। ১ লাখ ৪ হাজার ৪৭৭ ভোট পেয়েছেন তিনি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আলিম উদ্দিন ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৮৪ হাজার ১২৯ ভোট। তাঁর হয়ে সবচেয়ে বেশি নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। গাজীপুর-৩ (শ্রীপুর ও গাজীপুর একাংশ) আসনে ১ লাখ ২৬ হাজার ১৯৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন নৌকার প্রার্থী রুমানা আলী (টুসি)। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন (সবুজ) পেয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৬৭৪ ভোট।
গাজীপুর–৪ (কাপাসিয়া) আসনে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের সিমিন হোসেন (রিমি)। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৮৯ হাজার ৭২৯ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকে সিমিনের ফুফাতো ভাই স্বতন্ত্র প্রার্থী আলম আহমেদ পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৪৫ ভোট। আসনটিতে এ নিয়ে তিনবার জাতীয় নির্বাচনে জয় পেলেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে সিমিন হোসেন।