নোয়াখালী প্রতিনিধি :
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নকল স্বর্ণের বার আসল বলে প্রতারণা করে সিএনজির মহিলা যাত্রীদের নিকট থেকে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া চক্রের মুল হোতাসহ ৪জন সদস্য গ্রেফতার করেছে চরজব্বার থানা পুলিশ।
রবিবার (২৫ আগস্ট) রাতে দক্ষিণ ওয়াপদা বাজারে স্থানীয় জনগণ ছিনতাইকারী সন্দেহে ০৩ জনকে আটক করে। খবর পেয়ে চরজব্বার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের থানায় নিয়ে আসেন। এসময় তাদের সাথে থাকা একটি সিএনজি জব্দ করেন। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে মূল হোতা মামুনকে জেলার দত্তের হাট থেকে আটক করে।
আটককৃত আসামিরা হলেন, জেলার সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের জসীম উদ্দীনের ছেলে মোঃ সাইফুল ইসলাম (২৭), মাইজদী পৌরসভা ০৭ নং ওয়ার্ড (রুবেলের ভাড়া বাস) আনোয়ার হাজী ফিলিং স্টেশন সংলগ্ন মহিব উল্যাহ @ সেলিম মোঃ মাঈন উদ্দিন @ মামুন (৩০), নুর উদ্দিনের ছেলে মোঃ আকবর (২২), ধর্মপুর ইউনিয়নের মৃত সফি আলম ছেলে মোঃ হান্নান (৩০)।
পুলিশের ভাষ্যমতে, থানায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সুবর্ণচর ও সদর উপজেলা এলাকায় সিএনজি চালিত অটোরিকশায় মহিলা যাত্রীদের টার্গেট করে দীর্ঘদিন যাবত নকল স্বর্ণের বার দেখিয়ে প্রতারণা করে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার মত অপরাধ সংঘটিত করে আসতেছে এবং তাদের সাথে আরো কয়েকজন সক্রিয় সদস্য রয়েছে বলে জানা যায়।
ভুক্তভোগী মামলার বাদী আমেনা আক্তার পারুল জানান , এক নিকট আত্নীয় মারা গেলে তার জ্বা হাছিনা খাতুনসহ আত্নীয়ের বাড়িতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় উঠেন। সে সিএনজির পিছনে বসে থাকা দুই জন নেমে গিয়ে ড্রাইভারের দুই পার্শ্বে বসে তাদেরকে সিএনজির পেছনের সিটে জায়গা দেন।
এসময় সিএনজিটি কিছুদূর যাওয়ার পর সামনের সিটে বসে থাকা মোঃ আকবর রাস্তার মধ্যে একটি মানিব্যাগ পড়ে আছে বলে সিএনজি থামাইতে বলে। মানিব্যাগটি কুড়িয়ে নিয়ে এসে মানিব্যাগটি খুলে টিস্যু মোড়ানো সোনালী রংয়ের স্বর্ণের মত দেখতে একটি কাঠি এবং সাথে একটি চিরকুট বের করে। চিরকুটটিতে লেখা , “প্রিয় বন্ধু আমার সালাম নিবা। এখানে ২২ ক্যারেট এর ০৫ ভরী ওজনের স্বর্ণের কাঠি আছে। উক্ত স্বর্ণ দিয়া আমার বোনের বিবাহের জন্য গহনা বানিয়ে দিবা সহ আরো কিছু লেখা ছিল।”
ম্যানিব্যাগের সোনার বারটি ক্রয় করার জন্য তারা নিজেদের মধ্যে দামাদামি করতে থাকে।
এরই মধ্যে তারা আমেনাকে স্বর্ণের কাঠিটি অরজিনাল কিনা দেখার জন্য অনুরোধ করে তার হাতে দেয়। আমেনা স্বর্ণের কাঠিটি হাতে নিয়ে অবিকল স্বর্ণের মত দেখতে পেয়ে এবং চিরকুটে লেখাটি বিশ্বাস করে তাদেরকে অরজিনাল বলে জানায়। বাদী আমেনা বিষয়টি বিশ্বাস করায় আসামীরা সু-কৌশলে আমেনাকে ০৫ ভরি ওজনের নকল স্বর্ণের কাঠিটি দিয়ে তাঁর পরনের কানফুল,গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন এবং তাঁর জ্বা হাছিনা খাতুন স্বর্ণের তাবিজ, কানফুল খুলে নিয়ে সিএনজি থেকে নেমে যায়।
পরবর্তীতে আমেনা সেই স্বর্ণের কাঠিটি নিয়ে স্বর্ণের দোকানে গিয়ে মেপে দিতে বললে স্বর্ণের দোকানদার তাকে বস্তুটি স্বর্ণ নয় বলে জানায়।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ কাওসার আলম ভূঁইয়া বলেন, এঘটনায় আমেনা খাতুন নামে এক ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। আসামীদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিভাগের আরও খবর...