পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর হাতকড়া নিয়েই ভারত পালিয়ে যাওয়া আসামি মাসুম ওরফে মাসুদ রানাকে (২৮) অস্ত্র ও হেরোইনসহ আটক করেছে র্যাব।
সোমবার (২৬ জুন) ভোর ৫টায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চরআষাড়িদহ ইউনিয়নের বাড়ীনগর গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়।
একই সময় মাসুদ রানার সহযোগী মো. ইলিয়াসকেও (২৪) আটক করা হয়।
এসময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, ৮০ লাখ টাকা মূল্যের ৮০০ গ্রাম হেরোইন, হারিয়ে যাওয়া হ্যান্ডকাফ ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করে র্যাব।
সোমবার দুপুরে র্যাব-৫, সিপিসি-১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৫ এর অধিনায়ক রিয়াজ শাহরিয়ার এতথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিকে এ ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার দায়ে ৬ পুলিশ ইতোমধ্যেই শাস্তির আওতায় এসেছে।
মাসুদ রানা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার কোদালকাটি জেলেপাড়া গ্রামের মো. নাজিবুল ইসলাম ওরফে নাজিবুরের ছেলে ও মাসুদ রানার সহযোগী রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাড়ীনগর গ্রামের মৃত নায়েব আলীর ছেলে মো. ইলিয়াস (২৪)।
র্যাব অধিনায়ক জানায়, পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে হ্যান্ডকাফসহ পালিয়ে যাওয়ার পর র্যাব তাকে আটক করতে কাজ শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিক্তিতে দুর্গম চরে অভিযান পরিচালনা করে তাকে হাতেনাতে মাদক ও অস্ত্রসহ আটক করা হয়। ভারত থেকে হেরোইন এনে তা বাজারজাত করার উদ্দেশ্যে প্যাকেটজাত করার সময় তার কাছ থেকে হেরোইনগুলো জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও একটি বিদেশি পিস্তল ও পুলিশের হ্যান্ডকাফ জব্দ করে র্যাব।
র্যাব অধিনায়ক আরও জানান, একাধিক মাদক মামলার আসামি মাসুদ রানা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, পালিয়ে বেশকিছু দিন ভারতে অবস্থান করেছিলেন। কয়েকদিন আগে দেশে ফিরেছেন মাসুদ রানা৷
পুলিশ ও র্যাব সূত্রে জানা যায়, ২৪ মে (বুধবার) একটি মাদক মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি মাসুদ রানাকে আটক করে বিজিবি পোলাডাঙ্গা ক্যাম্পের সদস্যরা। পরে পুলিশ তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানায় নিয়ে আসে। এসময় গ্রেপ্তারকৃত আসামির মোবাইলে অনেকগুলো হেরোইনের ছবি দেখা যায়। রাতে তাকে সঙ্গে নিয়েই দুর্গম চরাঞ্চল সদর উপজেলার আলাতুলি ইউনিয়নের কোদালকাটি এলাকায় অভিযানে যায় পুলিশ। সেখানে স্কুলপাড়ার একটি পাঠখড়ির মাচা থেকে কোটি টাকা মূল্যের ১ কেজি ৮২ গ্রাম হেরোইন জব্দ করা হয়। সে সময় মাসুদের দুই হাতে একটি হ্যান্ডকাফ লাগানো ছিল।
ফেরার পথে ভোর ৫টার দিকে জেলেপাড়ার একটি লিচুবাগানে পুলিশ সদস্যদের ধাক্কা দিয়ে মাসুদ হ্যান্ডকাফ নিয়েই দৌড়ে অন্ধকারের মধ্যে লুকিয়ে যায়। এরপর পুলিশ পিছু নিলেও তাকে ধরতে পারেনি। এ ঘটনায় পুলিশের ছয় সদস্যকে প্রথমে থানা থেকে প্রত্যাহার ও পরে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।