ওই কাউন্সিলে তৃণমূলের সরাসরি ভোটে জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক নির্বাচিত হবেন। সম্মেলনে জেলা বিএনপির নেতৃত্বে কী ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে, এ নিয়ে রয়েছে নানা আলোচনা। তবে শনিবার কাউন্সিলে তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
এদিকে কাউন্সিলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। পরে সকলের মতামতের ভিত্তিতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে। আর সাধারণ সম্পাদক পদে লড়াই করছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব ও সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন।
সেই সঙ্গে বানানো হচ্ছে বেশ কয়েকটি তোরণ। ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টারে ছেয়ে ফেলা হয়েছে সম্মেলন মঞ্চের আশপাশ এলাকা।
জানাগেছে, দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলে প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত থাকবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেদিন জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে নানা দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন তিনি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ।
বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটু। এছাড়া জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকনের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত থাকবেন বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু, আজহারুল ইসলাম মান্নানসহ প্রমুখ।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কাউন্সিলকে ঘিরে তাদের ১০টি ইউনিটে কমিটির ১০১ জন করে কাউন্সিলর রয়েছেন। সে হিসেবে সারা জেলা জুড়ে ১ হাজার ১০ জন কাউন্সিলর তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এছাড়া সেদিন বিভিন্ন ইউনিট ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ১৫০০ ডেলিগেট উপস্থিত থাকবেন বলেও জানা যায়।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, সম্মেলন ও কাউন্সিল সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কাউন্সিলকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ বিরাজ করছে। ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। যা প্রমাণ করবে বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল এবং সর্বক্ষেত্রে গণতন্ত্র চর্চায় বিশ্বাসী।
এর আগে ২০০৩ সালে জেলা বিএনপি'র সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক রেজাউল করিম ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তৈমূর আলম খন্দকার। ওয়ান ইলেভেনের সময় সংস্কারবাদী হিসেবে অধ্যাপক রেজাউল করিমের নাম আলোচনায় থাকায় ২০০৯ সালের ২৫ শে নভেম্বর শহরের আলী আহমেদ চুনকা পৌর মিলনায়তনে জেলা বিএনপি'র সর্বশেষ সম্মেলনে তাকে বাদ দেয়া হয়।
পূর্ণাঙ্গ কমিটি আলোর মুখ না দেখায় সাড়ে ৩ বছর পর জেলা কমিটি ভেঙে দিয়ে ২০২০ সালের ৩১শে ডিসেম্বর কেন্দ্র থেকে পুনরায় এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারকে আহ্বায়ক ও অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে সদস্য সচিব করে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ৪১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছিল।
নির্দেশনা ছিল ৩ মাসের মধ্যে থানা,উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটি গঠন করতে হবে। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও এই আহ্বায়ক কমিটি সবগুলো ইউনিট কমিটি গঠনের কাজ শেষ করতে পারেনি। এরমধ্যে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে মেয়র নির্বাচন করায় তৈমূর আলমকে আহ্বায়কের পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক করা হয় মনিরুল ইসলাম রবিকে।
দুই বছরের মাথায় একই বছরের ১৫ নভেম্বর মনিরুল ইসলাম রবি ও মামুন মাহমুদের আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে দিয়ে কেন্দ্র থেকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে আহ্বায়ক ও জেলা যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব করে ৯ সদস্যবিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।