ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি)তে কর্তব্যরত অবস্থায় আহত ও অসুস্থ পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য এবং নিহত পুলিশ সদস্যের পরিবারের জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান করেছেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)। আজ মঙ্গলবার সকালে ডিএমপি হেড কোয়ার্টারের ৩য় তলার সভা কক্ষে ১৯৬ (একশত ছিয়ানব্বই ) জন পুলিশ সদস্যদের অনুকূলে ৭০ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩৪ টাকার আর্থিক অনুদান তুলে দেন ডিএমপি কমিশনার জনাব হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
আর্থিক অনুদান প্রদান শেষে ডিএমপি কমিশনার ডিএমপিতে কর্মরত পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা বিশ্বাস করি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ একটি এর প্রতিটি সদস্য একটি পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। এখানে "সকলের তরে সকলে আমরা ,প্রত্যেকে আমরা পরের তরে" কবির এই রচনায় রচিত নীতির উপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে আমাদের এই আর্থিক সহায়তা প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।
তিনি বলেন, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির কর্মসূচিতে আমাদেরই এক সহকর্মী আমিরুল ইসলাম পারভেজ ডিউটি চলমান অবস্থায় নির্মমভাবে মারা গিয়েছেন। আমরা তার পরিবারের কাছে মাত্র ৭২ ঘণ্টার(৩দিনের ) মধ্যে পেনশন সহ যাবতীয় যা কিছু আছে পৌঁছে দিয়েছি । পাশাপাশি তার ছোট্ট শিশু কন্যাটিকে প্রাপ্তবয়স্ক (সাবালিকা) না হওয়া পর্যন্ত নিয়মিতভাবে (প্রতি মাসে) আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে । এই নিয়মটি এখন থেকেই চালু করা হয়েছে।
দায়িত্ব পালনকালে কারো যদি এ ধরনের কোনো সমস্যা হয় এবং যদি পরিবারের অন্য কোন আয় রোজগারের অবলম্বন না থাকে তাহলে তাকেও এ ধরনের সুবিধা প্রদান করা হবে এমনটাই জানিয়েছেন । ডিএমপি'র অসুস্থ সদস্যদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ ও রোগ মুক্তি কামনা করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ২৮ অক্টোবর আমাদের আরো অনেক সদস্যই জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে গিয়ে মারাত্মক আহত হয়েছেন। এদের অনেকেই মোটামুটি এখন সুস্থতার পথে, নায়েক আব্দুর রাজ্জাক অনেক বেশি অসুস্থ। তাকেও আস্বস্ত করা হয়েছে পৃথিবীর যেখানেই তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হবে সেখানেই নিয়ে যাওয়া হবে। ইতিমধ্যে এক কোটি টাকা ব্যয়ে "ভারতের অ্যাপোলো হাসপাতালে" তার চিকিৎসার সার্বিক বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
এক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) একটুও পিছপা হয়নি। তিনি আমাদের সহকর্মী, তাকে সুস্থ করে তুলতে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিতেই আমাদের এই বন্দোবস্ত । তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান,আমাদের পারস্পরিক বন্ধন সম্পর্ক সেটি যেন সর্বদাই অটুট থাকে এবং আরো বেশি মজবুত হয় সেই প্রচেষ্টাই আমাদের অব্যাহত রাখতে থাকবে। তিনি আরো বলেন, ডিএমপি কল্যাণ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করার চেষ্টা করা হয়েছে। এছাড়াও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স কল্যাণ তহবিল, পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের কল্যাণ তহবিল আছে সেখান থেকেও আর্থিক সহায়তা পাওয়ার সুযোগ অনেক সুযোগ রয়েছে। ডিএমপি কমিশনার বলেন, বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতাল গুলোতে সবচেয়ে ভালো দক্ষ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন । এজন্য কারো চিকিৎসার প্রয়োজন হলে ডিএমপির ব্যবস্থাপনায় সেখানে সব ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। আপনি কল্যাণ তহবিলের আর্থিক সহায়তাও পাবেন। এছাড়াও সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিলে ভালো বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সেবাও পাবেন। প্রয়োজনে তিনি নিজেই কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)। এ সময় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার বিপিএম-বার; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খঃ মহিদ উদ্দিন বিপিএম-বার; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স এন্ড প্রকিউরমেন্ট) মুহাঃ আশরাফুজ্জামান বিপিএম, যুগ্ম-পুলিশ কমিশনারগণ, উপ-পুলিশ কমিশনারগণ ও বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, গত ২৬ অক্টোবর ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)-এর সভাপতিত্বে কল্যাণ তহবিল ব্যবস্থাপনা পরিষদের ৭২তম সভা ডিএমপি হেড কোয়ার্টারে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সর্বমোট ১৯৬ জন পুলিশ সদস্যের অনুকূলে ৭০ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩৪ টাকার আর্থিক অনুদান মঞ্জুর করা হয়। যা এ যাবৎ কালে কল্যাণ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ অনুদান। এতদিন ডিএমপি কল্যাণ তহবিলে কনস্টেবল থেকে সাব ইন্সপেক্টর পর্যন্ত পুলিশ সদস্যরা চাঁদা প্রদান করতেন। এখন থেকে কনস্টেবল থেকে কমিশনার পর্যন্ত সকল পদমর্যাদার অফিসারগণ চাঁদা প্রদান করবেন, কিন্তু আর্থিক সহায়তা পাবেন কনস্টেবল থেকে সাব ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যগণ। সূত্রঃ ডিএমপি-মিডিয়া সেল ।