নগর সংবাদ।।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের দুই মেয়াদেও নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডের পোড়াবাড়ি মসজিদ হতে চর শিমুল পাড়া ডাচ বাংলা পাওয়ার প্লান্ট পর্যন্ত রাস্তা পাকাকরণ না হওয়ায় এলাকার মানুষকে বছরের পর বছর ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ভাঙা রাস্তায় গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা হাঁটাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ফলে এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বৃষ্টিতে পানি জমে সড়ক হয়ে ওঠে খাল! যেখানে সেখানে ফেলা হয় বর্জ্য, ময়লা। জমে থাকা পানিতে ময়লা আবর্জনা মিশে পুরো এলাকার পরিবেশ দূষিত। এসব সড়কে যানবাহন তো দূরে থাক, পায়ে হেঁটে চলাও মুশকিল। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পোড়াবাড়ির মসজিদ হতে চর শিমুল পাড়ার ডাচ বাংলা পাওয়ার প্লান্ট পর্যন্ত প্রায় ১ কি.মি. এলাকা জুড়ে খানাখন্দে ভরে গেছে। বৃষ্টির পানি ও কাঁদামাটিতে একাকার হয়ে রয়েছে গোটা রাস্তাটি।ওই সড়ক দিয়ে দুর্ভোগের সাথে প্রতিদিন সহস্রাধিক বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। আর প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। রাস্তার এই বেহাল অবস্থা হওয়ায় প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী ৫০ হাজারেরও বেশি পথচারীদের পড়তে হয় চরম বিড়ম্বনায়। আবার জরুরি প্রয়োজনে অসুস্থ রোগী ও প্রসূতি পরিবহনে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দীর্ঘদিন থেকে এর স্থায়ী সংস্কার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকরা। অটোরিকশা যাত্রী চরশিমুল পাড়া গ্রামের পাভেল বলেন, রাস্তাটা খুব খারাপ হয়ে গেছে। রাস্তা খারাপের কারণে এখন গাড়ী চলাচল কমে গেছে। কোন রিকশাচালক রাস্তা দিয়ে যেতে চায় না। ফলে বাজার সদায় নিয়ে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়।ভাঙা রাস্তার কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। সিটি কর্পোরেশনের আওতায় রাস্তার এ রকম বেহাল দশা হলেও কেনো যে সংস্কার হচ্ছে না তা জানা নেই।
রিক্সা চালক হাশেম জানান, রাস্তা খারাপ হওয়ায় প্রায়শই গাড়ির চাঁকাসহ যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। চাকা ফেঁসে যাচ্ছে। যা উপার্জন করি তার বড় একটি অংশ গাড়ি মেরামতে ব্যয় করতে হচ্ছে আমাদের। আবার কখনও এ রাস্তায় ট্রাক ঢুকলে মালামালসহ উল্টে যাচ্ছে। এ কারণে ওই পথে ট্রাক যেতে চায় না। স্থানীয় কাউন্সিলরের উদ্যোগে কিছু কিছু স্থানে ইটের খোয়া দিয়ে দেয়া হলেও যান চলাচলে তা উপযোগী নয়।
এদিকে এলাকাবাসী জানান, আমাদের এলাকা সিটি কর্পোরেশন হয়েছে ১০ বছরের মতো হয়েছে। কিন্তু সিটি কর্পোরেশন এলাকার বাসিন্দা হয়েও আমরা অনেক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আমাদের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটির বেহাল দশা হওয়ার কারণে অনেক দূর্ভোগ পোহাতে হয় আমাদের। বৃষ্টি হলে বাজার করতে যাওয়া যায় না। রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আমরা দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ থেকে রেহাই চাই।
এলাকাবাসী নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী ও ডিএনডি প্রজেক্টের কাজে কর্মরত সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন যাতে রাস্তাটি দ্রুত করে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র-২ ও ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ্ব মতিউর রহমান মতি জানান, আমার ওয়ার্ডে এ রাস্তাটি খুবই প্রয়োজনীয়। আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে ইট-সুরকি ফেলে বেশ কয়েকবার মেরামত করা হয়েছে। ভাঙা রাস্তায় বয়স্ক ও শিশুদের চলতে অনেক সমস্যা হয়। রাস্তাটি সংস্কারের ব্যাপারে আমি মাননীয় মেয়র মহোদয়ের সাথে অনেকবার কথা বলেছি। জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে অচিরেই রাস্তাটির সংস্কারের ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হবে বলে আশা রাখি।