নগর সংবাদ।।সুমনসেন চট্টগ্রাম প্রতিনিধি- চট্টগ্রাম শহরের একমাত্র বুকভরে শ্বাস নেয়ার প্রাণকেন্দ্র ডিসি হিল এর পর বলা যায় এই সিআরবিকে। নগরের ফুসফুস হিসেবে পরিচিত পেয়েছে এই স্থানটি। শহরের এমন কেউ নেই যে এই স্থানে এসে একবার হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়নি।কিন্তু কিছু মানুষ রুপী শকুনের তীক্ষ্ণ নজর পড়েছে। এটা রেলওয়ের ভূমি দখল নিয়ে এক প্রকার ব্যবসায়ীদের চলছে ষডযন্ত্র। চট্টগ্রামের সিআরবি’র উপর, প্রাইভেট হাসপাতালের নামে কসাইখানা নির্মাণ করে ভয়ংকর কালো থাবা দিয়ে গাছখেকোর দল চিবিয়ে খেতে চায় সিআরবি। সিআরবির শতবর্ষী শির উঁচু করে দাড়িয়ে থাকা মাতৃবৃক্ষগুলো যেন তারা হিংস্র নখরে আঁচড়ে উপড়ে ফেলতে চায়। অথচ এদিকে সবুজায়ন বাড়াতে ডাক দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৮ জুলাই জলবায়ু বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ৪৮টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সামনেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সকলকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ বিশ্ব গড়তে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে সবুজায়ন বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন। কিছুদিন আগে পরিবেশের কথা বিবেচনায় নিয়ে ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যদি হাসপাতাল করতে হয় করুক। রেলওেয়ের অনেক খাস জমি রয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জমির পরিমাণ সাত হাজার ৭০১ একর। এর মধ্যে ২১৫ একরই বেদখল। এসবে রেলের কোন খবর নেই। তারা মেতেছে সিআরবি ধ্বংসের কাজে। নগরীর পাহাড়তলী, টাইগার পাস, খুলশী, আমবাগান, কদমতলী, আইস ফ্যাক্টরি রোড, ফয়’স লেক এলাকায় রেলের জমিতে গড়ে উঠেছে পাকা ভবন, পার্ক ও বিপণিবিতান, বিশাল বহুল মাকেট, বিশাল বাগান বাডি,মাছের প্রোজেক্ট, এই জায়গা গুলো কি রেলওয়ে কতপক্ষ দেখেন না! আর দেখবেই বা কেমন করে এই সব জায়গা লীজ না দিলে তো রেলওযের উদতন কতপক্ষের পকেট ভারী হবে না, নামে বেনামে ফ্ল্যাট, জাযগার মালিক হতে পারবে না। যেখানে চায়ের কাপে টুংটাং শব্দে জমে উঠেছে কত শত আড্ডা। বাদাম চিবুতে চিবুতে শিরিষ তলায় বাচ্চাদের ফুটবল ক্রিকেট কে না দেখছে। পাশাপাশি বসে কত মান অভিমানের কাব্য রচিত হয়েছে এই শিরিষ তলায় তা না হয় বাদই দিলাম। ঐতিহ্যের সাথে যেন মাখামাখি এই চট্টগ্রাম শিরিষতলা। পহেলা বৈশাখে নতুন রঙে বাঙালির বর্ষবরণে সাজে নতুন সাজে। ‘শিরিষ তলায়’ বর্ণাঢ্য আয়োজনে বরণ করা হয় বাংলা নতুন বছরকে। সাহাবুদ্দীনের বলি খেলা নিয়ে তুমুল প্রতিযোগিতা চলে এই সিআরবিতে। কত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এই সিআরবিকে ঘিরে প্রাকৃতিক ঐতিহ্য, পরিবেশ, পাহাড় ধ্বংস করে সিআরবিতে হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ নির্মাণ চট্টগ্রামবাসী চায় না। এসবের নামে শুরুতে কর্তন করা হবে গাছ, পরবর্তীতে তা বর্ধিত করে ধ্বংসযজ্ঞ চলবে। পরিবেশ ধ্বংস করে সিআরবিতে হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হোক এটাও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা করি কখনো চাইবেননা। আবারো কি “সি আর বি” বাচ্চাদের ফুটবল ক্রিকেট ছন্দে মেতে উঠবে? আবারো কি “সি আর বি তে”চায়ের কাপের টুংটাং শব্দে জমে উঠবে কি আড্ডা? আবার সব হবে আগের মতো যদি আমি আপনি জেগে উঠি জিতে যাবে সিআরবি। রক্ষা পাবে শতবর্ষী মাতৃবৃক্ষগুলো।