মোঃ মাসুদ রানা, নীলফামারী।
নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ১ নং ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নে অর্থের বিনিময়ে ভিজিএফ কার্ড দেয়ার নামে সংশ্লিষ্ট সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ গ্রাম পুলিশের রমরমা ব্যবসায় এলাকাবাসী হতবাক। অনেকের কাছে টাকা নিয়েও তাদের ভাগ্যে জোটেনি ভিজিএফ কার্ড। চলমান ২০২৩-২৪ ইং অর্থ বছরের জন্য অসহায় দুঃস্থদের মাঝে ভিজিএফ কার্ড দেয়ার নামে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাদের নির্ধারিত বরাদ্দের চেয়ে তিন থেকে চার গুণ দুঃস্থ পরিবারের কাছ থেকে কার্ড দেয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। রবিবার ৩০ এপ্রিল ভোগডাবুড়ী ইউনিয়ন পরিষদে জানুয়ারি থেকে মার্চ তিন মাসের চাল বিতরণের পূর্বে কার্ডধারীদের হাতে কার্ড তুলে দেয়ার সময় সকলের সামনে এ চিত্র ধরা পড়ে।
কার্ড বিতরণের সময় ট্যাগ অফিসারের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নুরুন্নাহার শাহাজাদী। এমন ঘটনার চিত্র দেখে তিনি ভিজিএফ এর চাল বিতরণের সূচনা করে দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। এ সময় ইউনিয়নের কয়েকটি ওয়ার্ডে অনেক অসহায় পরিবার টাকা দেয়ার পরও সারাদিন সংশ্লিষ্ট মেম্বারের কাছে ধরনা দিয়েও তাদের ভাগ্যে জোটেনি ভিজিএফ কার্ড। এদের মধ্যে অনেকেই নিরুপায় হয়ে ভিজিএফ কার্ড না পেয়ে তাদের টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এসময় ৯নং ওয়ার্ডের আলমগীরের স্ত্রী শাহিনা বেগম বলেন, সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর মায়া বেগম আমার বাড়ি গিয়ে ভিজিএফ কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে আসে। রবিবার ভিজিএফ চাল তুলতে এসে জানতে পারি আমার নামে কাঠ হয়নি। এ সময় মহিলা কাউন্সিলর মায়া বেগমের স্বামী আবু তাহের চড়াও হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।
৯ নং ওয়ার্ডের জয়তুন, মোরশেদা,জাহানারা, রুনা, বুলবুলি, পারভিন, নুর নেহার সহ আরো অনেকেই বলেন, গ্রাম পুলিশ মমিনুল হকের হাত দিয়ে কাউন্সিলর সাহেব একটি কার্ডের জন্য ১০ হাজার ৮ হাজার ৭ হাজার করে টাকা নিয়েছে। ভিজিএফ চাল তুলতে এসে আমরা জানতে পারি আমাদের কারো নামে কোন কার্ড হয়নি। এ বিষয়ে ভিজিএফ এর চাল তুলতে আসা ৭ নং ওয়ার্ডের আবু তাহেরের স্ত্রী আম্বিয়া বলেন, কাউন্সিলর আমাকে ভিজিএফ কার্ড দিতে চেয়ে ৭ হাজার টাকা নিয়েছে, আমিও চাল তুলতে এসে দেখি আমার নামে কার্ড হয়নি। ৮ নং ওয়ার্ডের জালালের স্ত্রী রানী কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, চেয়ারম্যানের ভাতিজা কাজল ভিজিএফ কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে দুই দফায় আমার কাছে ৯ হাজার টাকা নেওয়ার পরেও আমাকে কার্ড দিলো না আমি বিষয়টি চেয়ারম্যান সাহেবকে বলার পরও এর কোন সুফল পাইনি। পূর্ব ভোগডাবুড়ি গ্রামের জাকির হোসেন রাজা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের কাউন্সিলরদের নামে ভিজিএফ কার্ডের যে রমরমা ব্যবসা চালিয়েছে তাতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ করা উচিত। ১ নং ভোগডাবুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম কালু বলেন, ভিজিএফ কার্ড না পাওয়া মহিলাদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে কাউন্সিলরেদর সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজনে বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকেও জানাবো।